জুমবাংলা ডেস্ক : দুটি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করে হাতেনাতে ধরা পড়েছিলেন বিভাগের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের হাতে। কিন্তু সেই শিক্ষার্থীকেই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে করা হয়েছে চূড়ান্ত সুপারিশ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগে এমনই ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত প্রার্থীর নাম ছত্রেশ্বর বণিক অমর। তিনি বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, চতুর্থ বর্ষের ডেভেলপমেন্টাল সাইকোলজি টু (৪০৪) এবং ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি (৪০৬) টিউটোরিয়াল পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করেন অভিযুক্ত প্রার্থী ছত্রেশ্বর। তার নকলের বিষয়টি বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির সুপারিশে উল্লেখ করে দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, উক্ত প্রার্থীর ক্ষেত্রে বিভাগের দুইটি টিউটোরিয়াল পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে।
অভিযোগের পরেও গত ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের উপস্থিতিতে ভাইভা বোর্ডে তাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে সর্বোচ্চ সুপারিশ করা হয়। ভাইভা বোর্ডে আরো উপস্থিত ছিলেন- পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. অঞ্জন কুমার চৌধুরী, ফরেস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. দানেশ মিয়া, মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. রুমানা আক্তার।
জানা যায়, প্ল্যানিং কমিটির উভয় সভাতে বিভাগের চেয়ারম্যানকে নোট অব ডিসেন্ট দিতে বাধা দেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও প্ল্যানিং কমিটির সদস্য ড. অরুনাভ বৈরাগী। মূলত বিতর্কিত ওই প্রার্থী তার পছন্দের হওয়ায় তিনি তার নিয়োগের জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। আগামী ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটে এই প্রার্থীর প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে।
অভিযুক্ত প্রার্থীর পরীক্ষায় অসদুপায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক লাইলুন নাহার বলেন, ‘ছত্রেশ্বর বণিক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী থাকাকালে আমার কোর্সের টিউটোরিয়াল পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করে। আমি তার নকলসহ খাতা এবং তার মুচলেকাসহ সমুদয় তথ্যাদি সংরক্ষণ করে রেখেছিলাম। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং করোনাকালে দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়ে কার্যক্রম বন্ধ থাকায় উইপোকা বইসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নষ্ট করে ফেলে। এতে ওই জরুরি খাতাটাও (নকল এবং মুচলেকা) নষ্ট হয়ে যায়।’
২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি ও ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল মনোবিজ্ঞান বিভাগের একজন প্রভাষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়। একটি পদের বিপরীতে আবেদন করেন ৩৭ জন এবং ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন ১৩ প্রার্থী।
চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, ‘ছাত্র অবস্থায় কারও বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ থাকলে এবং সেটা যদি নিয়োগ বোর্ড জানে তাহলে বোর্ডের বিবেচনা করার কথা। নিয়োগ বোর্ডকে অবশ্যই বিষয়টি দেখতে হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।