জুমবাংলা ডেস্ক : দীর্ঘ ৬ বছর ধরে রেলস্টেশনের ভাসমান মানুষদের সেহরি খাওয়ায় নোয়াখালীর ‘বেগমগঞ্জ মানব কল্যাণ সংগঠন’। ঠিক সেহরির সময় হলে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষেরা এখানে খাবার খেতে একত্রিত হন। ২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া উদ্যোগটি প্রশংসা কুড়িয়েছে। এদিকে বিনামূল্যে খাবার পেয়ে বেশ খুশি রোজাদাররা।
বুধবার (২৬ মার্চ) ভোররাতে ভাসমানদের জন্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের আয়োজন করা হয়। বেগমগঞ্জের চৌমুহনী রেলস্টেশনে থাকা ৩৫০ ছিন্নমূল ভাসমান মানুষের সঙ্গে সেহরি খেয়েছেন বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আরিফুর রহমান।
মো. রেদোয়ান আলী নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, রেললাইন বা রেলস্টেশন থাকায় অনেক মানুষ এখানে থাকে। আমি প্রায় এখানে এসে সেহরি করি। পাশাপাশি সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এখানে এসে বিনামূল্যে সেহরি খান। এমন আয়োজন দীর্ঘ ছয় বছর ধরে চলছে। আমরা সাধুবাদ জানাই।
সেহরি খেতে আসা আবুল কালাম নামের আরেকজন বলেন, আমাদের বাড়িঘর নেই। এখানে দিনের বেলায় কাজ করি রাত হলে স্টেশনে থাকি। যখন কাজ থাকে না তখন খাবার জুটে না। রমজান মাস এলে এখানে বিনামূল্যে সেহরি পাই। এটা আমাদের অনেক উপকার হয়। আজকে মেজবানি খেলাম। খুব ভালো লাগছে।
বেগমগঞ্জ মানব কল্যাণ সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক টিপু সুলতান বলেন, সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা প্রতিদিন বাজার করে খাবার পরিবেশন করে থাকি। আজ সেহরিতে ৩৫০ জন মানুষের জন্য ঐতিহ্যবাহী মেজবানের আয়োজন করা হয়েছে। আমাদের ইউএনও স্যার নিজে এসে সবার সঙ্গে খেয়েছেন। আমরা এভাবে উৎসাহ পেলে এমন কার্যক্রম অব্যাহত রাখব ইনশাআল্লাহ।
চৌমুহনীর ব্যবসায়ী মোরশেদুল আমিন ফয়সল বলেন, চৌমুহনী বাজারের ব্যবসায়ীরা সারা বছরের ইনকাম থেকে এখানে রমজানের খাবারের জন্য টাকা বা চাল, ডাল কিনে দিয়ে থাকেন। যারা ছিন্নমূল আর ভাসমান আমরা কেবল তাদেরই খাবার খাইয়ে থাকি। আমাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান মহোদয় আজ ভাসমান মানুষের সঙ্গে সেহরি করেছেন। তাদেরকে খাবার তুলে দিয়েছেন। আমরা চাই এমন মানবিকতা অব্যাহত থাকুক। আমি সব সময় এমন সহযোগিতা করে যাব।
নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন বলেন, আজকে আমি নিজেও এই ভাসমান মানুষদের সঙ্গে সেহরি খেয়েছি। সমাজে এমন সম্প্রীতি থাকলে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ হবে। যারা এই উদ্যোগে অর্থ ও শ্রম দিচ্ছেন সবাইকে আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে স্যালুট জানাই। আমি চাই এই কার্যক্রম চালু থাকুক।
বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আরিফুর রহমান বলেন, দীর্ঘ ছয় বছর ধরে স্বেচ্ছাসেবকরা যে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তা প্রশংসনীয়। এটি একটি মহৎ কাজ। অনেকের অঢেল সম্পদ থাকলেও মন থাকে না। যাদের মন থাকে তাদের আবার সম্পদ থাকে না। মানবিক কাজে ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা করছেন জেনে আমি খুশি হয়েছি এবং নিজেই রেললাইনে সেহরি খেয়েছি। স্বেচ্ছাসেবকদের দেখে অন্যদের এমন মানবিক কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। সূত্র : ঢাকা পোস্ট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।