মুফতি জাকারিয়া হারুন : তাকবিরে তাশরিক একটি ওয়াজিব আমল। জিলহজের ৯ তারিখের ফজর থেকে ১৩ তারিখের আসর পর্যন্ত দিনগুলোকে তাশরিকের দিন বলে। এসব দিনে মুসল্লিরা যে তাকবির পড়েন তাকে তাকবিরে তাশরিক বলে। এ তাকবিরে মুসল্লিরা মহান আল্লাহর মহত্ব, বড়ত্ব ও একক সত্ত্বার কথা বলেন এবং আল্লাহর প্রশংসা করেন। এ দিনগুলোতে মুসল্লিরা প্রত্যেকে ফরজ নামাজের পর আল্লাহর প্রশংসায় তাকবির দেন।
মহান আল্লাহর প্রিয় বাক্যগুলোর একটি হলো- আল্লাহু আকবার। তাই তাকে খুশি করতে হলে তাকবির বেশি বেশি পড়া উচিত।
তাকবিরে তাশরিক হচ্ছে- اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَاَللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ উচ্চারণ: আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ।অর্থ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; সব প্রশংসা মহান আল্লাহ জন্য।
তাকবিরে তাশরিক যেদিন থেকে পড়তে হয়
প্রত্যেক মুসল্লির জন্য জিলহজের ৯ তারিখের ফজর হতে ১৩ তারিখের আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজ আদায় করে সালাম ফিরানোর সঙ্গে সঙ্গে উচ্চস্বরে একবার তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব। এ বছর রোববার (১৬ জুন) ফজরের নামাজ থেকে শুরু করে বৃহস্পতিবার (২০ জুন) আসর পর্যন্ত। (আদ্দুররুল মুখতার: ৩/১৭৭-১৭৮)
তাকবিরে তাশরিক সংক্রান্ত মাসায়েল
১. নারীরা এই তাকবিরে তাশরিক নিচু স্বরে আদায় করবেন। উচ্চস্বরে নয়। (হাশিয়া তাহতাবী ১/৩৫৭)
২. ইমাম তাকবির বলতে ভুলে গেলে মুক্তাদিরা ইমামের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেরা তাকবির বলবেন। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫২)
৩. প্রত্যেক ফরজ নামাজের সালামের পর পরই কোনো কথাবার্তা বা নামাজ পরিপন্থি কোনো কাজ করার আগেই তাকবিরে তাশরিক পড়তে হবে। (রদ্দুল মুহতার ২/১৮০)
৪. কোনো সময় সবাই বা কেউ কেউ তাকবির বলতে ভুলে গেলে এবং মসজিদ থেকে বের হওয়ার আগেই মনে পড়লে তাকবির আদায় করে নিতে হবে। আর যদি মসজিদ থেকে বের হয়ে যায় তাহলে এই ওয়াজিব ছুটে যাবে। এই ওয়াজিবের কোনো কাজা নেই এবং ওয়াজিব ছেড়ে দেয়ার কারণে ওই ব্যক্তি গোনাহগার হবেন। (মাবসুত সারাখসী ২/৪৫)
৫. তাশরিকের দিনগুলোতে কোনো ফরজ নামাজ কাজা হয়ে গেলে ওই দিনগুলোর মধ্যে তার কাজা আদায় করলে তাকবির বলা ওয়াজিব। কিন্তু এই কাজা পরবর্তীতে অন্য সময় আদায় করলে তাকবির বলা ওয়াজিব নয়। একই সঙ্গে ৯ জিলহজের আগের কোনো নামাজ তাশরিকের নির্ধারিত দিনগুলোতে আদায় করলে তাকবির বলা ওয়াজিব নয়। (বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৬৪)
৬. কোনো ব্যক্তির যদি জামায়াতে নামাজ আদায়কালে প্রথম দিকে এক বা একাধিক রাকাত ছুটে যায়, তাহলে ইমাম সাহেব সালাম ফেরানোর পর ওই ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নিজের নামাজ আদায় করার পর তাকবিরে তাশরিক বলবেন। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫২)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।