জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ ইন্টারনেট সেবায় বিভ্রাট, সব ডাটা সেন্টার ডাউন। ঘড়ির কাটায় ঠিক যেই সময় থেকে এই বিভ্রাট লক্ষ্য করা গেছে, একই সময়ে মহাখালীর খাজা টাওয়ারের ১৩ তলায় আগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খাজা টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে ইন্টারনেট সেবার কিংবা সব ডাটা সেন্টার ডাউন হওয়ার কী সম্পর্ক রয়েছে এমন প্রশ্ন উদয় হয়েছে রাজধানীবাসীর মনে।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে মহাখালীর খাজা টাওয়ারের ১৩ তলায় এই আগুন লাগে। এদিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, বিকেল ৪টা ৫৮ মিনিটে তারা আগুন লাগার খবর পায়। ৫টা ৭ মিনিটে তাদের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এখন পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট কাজ করছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এরইমধ্যে আগুনের ঘটনায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তায় যোগ দিয়েছে।
এদিকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সব ডাটা সেন্টার ডাউন হয়ে পড়েছে। তাই মোবাইল ফোন গ্রাহকরা ভয়েস কলসহ ডাটা ব্যবহারে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এছাড়াও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবহারে সমস্যা হচ্ছে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার পর থেকে হঠাৎ করেই ইন্টারনেটের গতি কমে যায় বলে অনেক গ্রাহক জানিয়েছেন। কোথাও কোথাও সংযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু গ্রাহক তাদের সমস্যার কথা জানান।
রাজধানী ঢাকার মহাখালীর খাজা টাওয়ারে লাগা আগুনে এনআরবি নামে একটি ডাটা সেন্টার পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও আরও কয়েকটি আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) শাটডাউন থাকায় দেশে ইন্টারনেটের গতি ধীর হয়েছে। দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি’র সভাপতি এমদাদুল হক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ঢাকা কোলা নামের আরেকটি ডাটা সেন্টার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ওটা পুড়ে গেলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে।’
কবে নাগাদ ইন্টারনেটের গতি ফিরবে জানতে চাইলে এমদাদুল হক বলেন, ‘ওই ভবনের লেভেল থ্রি, ম্যাক্স হাব, আমরা নেটওয়ার্কস, আর্থনেট ও উইনস্ট্রিম আইআইজি পুড়ে গেছে। ফলে এরইমধ্যে ৭০-৮০% ব্যান্ডউইথ হারিয়েছি। ইন্টারনেটের গতি কবে নাগাদ ফিরবে, সে বিষয়ে এখন কিছুই বলা যাচ্ছে না।’
কী আছে এই খাজা টাওয়ারে
আইটি সেক্টরের অনেকগুলো সার্ভিস মহাখালীর খাজা টাওয়ার থেকে চলে জানিয়ে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান নেক্সট অনলাইনের এজিএম মাহফুজুল ইসলাম জানান, মহাখালীর যে ভবনটিতে আগুন লেগেছে সেখান থেকে অনেকগুলো ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার (আইএসপি) প্রতিষ্ঠান সেবা দিয়ে থাকে।
তিনি বলেন, শুধু ইন্টারনেটই নয়, আরও অনেক সার্ভিস আছে ওখানে। এখন আইএসপি অনেক বেশি অর্গানাইজড। এক জায়গায় সমস্যা হলে বিকল্প উপায়ে কাজ চালানো হয়। তারপরেও ভবনে আগুন লাগার কারণে অনেক সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। আর্থ কমিউনিকেশনের একটা বড় ধরণের আইআইজিও আছে ওখানে; এছাড়া অধিকাংশ আইএসপির পপ ওখানে। আগুনের কারণে কমবেশি সব প্রতিষ্ঠানের ওপর প্রভাব পড়ছে।
এদিকে দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন এক ফেসবুক পোস্টে জানায়, মহাখালীর আমতলীর খাজা ভবনে আগুন লাগার কারণে কারিগরি বিপর্যয়ে গ্রামীণফোন থেকে অন্য অপারেটরে ভয়েস কল দিতে অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারেন গ্রাহকরা। এ সমস্যাটি সমাধানে গ্রামীণফোন কাজ করছে বলেও পোস্টে জানানো হয়েছে।
এদিকে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের গ্রাহকদের বার্তা পাঠাতে শুরু করেছে। একটি আইএসপি তাদের গ্রাহকদের লিখেছে, ‘সম্মানিত গ্রাহক, মহাখালী খাজা টাওয়ারে অবস্থিত ডাটা সেন্টারে আগুন লাগার ফলে আমাদেরসহ দেশের বহু আইএসপির ব্যান্ডউইথ ডাউন রয়েছে। যার কারণে এই মুহূর্তে সব গ্রাহক ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। আমরা আশা করি, দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং ইন্টারনেট কানেকশন সচল হবে। ধৈর্য ধরে সময় দিয়ে সহযোগিতা করুন। সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’
উল্লেখ্য, রাজধানীর মহাখালীতে খাজা টাওয়ারের ১৩ তলায় বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুনের খবর ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ভবনের ১৩ ও ১৪ তলায় থাকা লোকজনের মধ্যে। এ সময় ভবনের ১৪ তলা থেকে দড়ি বেয়ে নামতে দেখা যায় অনেককে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।