জুমবাংলা ডেস্ক : পাবনার আতাইকুলা থানার ছাদ থেকে এসআই হাসান আলীর গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের দাবি হাসান আলী আত্মহত্যা করেছেন। চাকরিতে যোগদানের দেড় মাস পর গত ২১ মার্চ থানা ভবনের ছাদে উঠে নিজের পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন হাসান।
মৃত্যুর আগে তিনি ডায়েরিতে তার অব্যক্ত বেদনার অনেক কথা লিখে গেছেন। মৃত্যুর আগে তিনি শেষবার তার ডায়েরিতে লিখেছেন, ‘আমি কখনো ভালো অফিসার হব না। আমি বাঁকা অফিসার। আমি Negative, বেয়াদব, মুখে মুখে তর্ক করি। Special power নিয়ে ভর্তি হয়েছি। আমি over smart…’
ওই রাতে প্রয়াত হাসান আলী তার বাবা, মা চাচার সঙ্গে কথা বলেন। তার বোন কেশবপুর কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মুক্তা জানান, তার ভাই মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে তার বাবা চাচাদের দেনা পরিশোধ করতে বলেন। আর ল্যাপটপটি তাকে দিতে বলেন। এই ছিল প্রয়াত হাসান আলীর পরিবারের সঙ্গে শেষ কথা।
আর ডায়রির ১০ পাতা হাসান আলীর হাতে লেখা বলে শনাক্ত করেন তার বোন মুক্তা।
মুক্তা জানান, ২২ মার্চ যশোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে তাদের পরিবারকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রয়াত হাসান আলীর হাতে লেখা ডায়েরির কিছু পাতা দেখানো হয়।
হাসান আলীর জীবনের কিছু কিছু খণ্ডিত অংশ লেখা ডায়রির ১০টি পাতায় আরও লেখা আছে, তার পরিবার খুবই অসচ্ছল। বাড়িতে লেখাপড়া করার মতো পরিবেশ কখনই ছিল না।তিনি তার পরিবারের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া। তিনি তার পরিবারকে আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তা করতেন।
ডায়েরির কয়েকটি স্থানে এসআই হাসান বারবার লিখেছেন, ‘আমি আর পারছি না সহ্য করতে। শুধু মনে হচ্ছে মুক্তি চাই এই পৃথিবী থেকে। তবে এটাই আমার শেষ চাওয়া আমি কারো ভিক্ষা নিয়ে জীবন ধারণ করতে চাই না। পৃথিবী থেকে মুক্তি চাই।’
অভাবের সংসার, লেখাপড়ার পরিবেশ না থাকা, টিউশনি করে জীবিকা নির্বাহ, জামা কাপড়ের অভাব, যোগ্যতা বলে এসআই পদে চাকরি সব মিলিয়ে এক দুর্বিষহ জীবন ছিল হাসান আলীর।
প্রয়াত এসআই হাসান আলীর আত্মহত্যার কারণ তদন্তে পাবনা পুলিশ সুপারের তদন্ত দলের প্রধান মো. মাসুদ আলম বলেন, তদন্তের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে প্রয়াত হাসান আলীর পরিবারদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।