নতুন কম্পিউটার কেনার ক্ষেত্রে বা পুরনোটি আপডেটের জন্য স্টোরেজ নির্বাচন বা পরিবর্তন জরুরি। এক্ষেত্রে বর্তমানে সলিড স্ট্রেট ড্রাইভ (এসএসডি) ও হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ (এইচডিডি) দুটোই রয়েছে। তবে এ দুটোর মধ্যে কোনটি ভালো আর কোনটি খারাপ সেটি নির্ধারণের কিছু মানদণ্ড রয়েছে।
এসএসডি ও এইচডিডির মধ্যে পার্থক্য: এ দুটি স্টোরেজের মধ্যে অন্যতম প্রধান বিষয় হচ্ছে এইচডিডিতে তথ্য সংরক্ষণে ম্যাগনেটিক ডিস্ক ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে এসএসডি ইলেকট্রনিক ফ্ল্যাশ মেমোরি ব্যবহার করে। এ দুটি স্টোরেজ সিস্টেমের মধ্যে আরো পার্থক্য রয়েছে। প্রথমত, রিড ও রাইট স্পিডের দিক থেকে হার্ড ড্রাইভের তুলনায় এসএসডি এগিয়ে। দ্বিতীয়ত, হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে দামের দিক থেকে হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ সাশ্রয়ী এবং তথ্য পুনরুদ্ধারও এসএসডির তুলনায় সহজ।
এসএসডি কী: সলিড স্ট্রেট ড্রাইভ (এসএসডি) মূলত ফ্ল্যাশ মেমোরি চিপ এবং এগুলোর হার্ড ডিস্কের তুলনায় আকারে ছোট। এইচডিডির মতো এটিও সাটা থ্রি পোর্টসহ আসে এবং সহজে যেকোনো সিস্টেমে যুক্ত করা যায়। এসএসডিতে পিসিআইই কানেকশন থাকে, যা সরাসরি মাদারবোর্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং দ্রুত ফাইল আদান-প্রদান করা যায়।
এইচডিডি কী: সাধারণ ম্যাগনেটিক ডিস্ক ঘোরানোর মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ করে হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ (এইচডিডি)। অধিকাংশ হার্ড ড্রাইভেই সাটা কানেকশন ব্যবহার করা হয়। এসএসডির তুলনায় এগুলোর দাম কম এবং বেশি স্টোরেজও সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়।
দুটো স্টোরেজ সিস্টেমের মধ্যে বেশকিছু বিষয়ে পার্থক্য রয়েছে। এগুলো হলো—
গতি: সাধারণ হার্ড ড্রাইভের তুলনায় এসএসডি চার গুণ দ্রত কাজ করতে সক্ষম। সাটা ও পিসিআইই কানেকশনের কারণে এসএসডির রিড ও রাইট স্পিডেও পরিবর্তন আসে। এসএসডির রিড স্পিড প্রতি সেকেন্ডে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার মেগাবাইট। অন্যদিকে হার্ডড্রাইভের গতি ৮০ থেকে ২০০ মেগাবাইট পর্যন্ত হয়ে থাকে।
দীর্ঘস্থায়িত্ব: এসএসডি ও এইচডিডি দুই দীর্ঘস্থায়ী বা টেকসই। তাই ব্যবহারকারীর প্রয়োজন ও বাজেট অনুযায়ী স্টোরেজ অপশন নির্বাচনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। ক্ষেত্র বিশেষে এসএসডি ৫-১০ এবং হার্ড ডিস্ক তিন-পাঁচ বছর পর্যন্ত চলতে সক্ষম।
স্টোরেজ সক্ষমতা: যাদের প্রতিনিয়ত বড় ধরনের ফাইল আদান-প্রদান করতে হয় তাদের জন্য এসএসডি কার্যকর। তবে সংরক্ষণের দিক থেকে হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ কিছু সুবিধা দিয়ে থাকে। বিশেষ করে এসএসডিতে ১৫ শতাংশের বেশি জায়গা খালি রাখতে হয়। অন্যদিকে হার্ড ড্রাইভে কিছু অংশ খালি রাখলেও কাজ চালানো যায়।
খরচ: এসএসডি হোক বা হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ, স্টোরেজের রিড-রাইট গতির ওপর এর দাম নির্ধারিত হয়ে থাকে। সাটা থ্রি, পিসিআইই থ্রি ও ফোর কানেকশনের ভিত্তিতে এসএসডির দামে পরিবর্তন দেখা যায়।
ব্যবহারকারী অনুযায়ী স্টোরেজ নির্বাচন: স্টোরেজ নির্বাচনের আগে কী ধরনের কাজ করা হবে সেটি ঠিক করতে হবে। যারা গেম খেলে থাকে বা ভিডিও নিয়ে কাজ করেন তাদের জন্য সহজ ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান এসএসডি। অন্যদিকে যাদের কম খরচে বেশি স্টোরেজ প্রয়োজন তাদের জন্য হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ কার্যকর।
শব্দের মাত্রা: কম্পিউটার চালুর পর তথ্যসংক্রান্ত কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে হার্ড ডিস্ক ড্রাইভে বেশি শব্দ হয়। এদিক থেকে এসএসডি কম শব্দে কাজ করে থাকে। গায়ক বা শিল্পী, কণ্ঠশিল্পী, অভিনেতাদের জন্য এসএসডি বেশ কার্যকর।
স্টোরেজ ইনস্টলেশন: মাদারবোর্ডে থাকা পোর্টের ভিত্তিতে এসএসডি ও হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ দুটোই ইনস্টল করা যায়। তবে সঠিক ভিডিও দেখার মাধ্যমে হার্ড ড্রাইভ ইনস্টল করা তুলনামূলক সহজ।
বিদ্যুৎ ব্যবহার: এসএসডি ও হার্ড ড্রাইভ পারতপক্ষে খুব বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে না। তবে পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিটের (পিএসইউ) ওপর অধিক চাপ তৈরি করতে না চাইলে হিসাব করে স্টোরেজ অপশন নির্বাচন করতে হবে। মেক ইউজ অব অবলম্বনে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।