আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউরোপের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এলব্রুস পর্বত জয় করেছেন করোনাজয়ী সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের হাওরপাড়ের সন্তান পর্বতআরোহী আখলাকুর রহমান। বাঙালির ঐতিহ্য ধারন করে মাথায় গামছা বেঁধে বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ডের জাতীয় পতাকা বহণ করে সম্প্রতি তিনি রাশিয়ার ইউরোপীয় অংশের দক্ষিণে অবস্থিত এলব্রুস পর্বত চূড়া জয় করেন। বিশ্বে তিনিই প্রথম বাঙালি হিসেবে এলব্রুস পর্বত জয়ের রেকর্ড করেন। আখলাকুর রহমান আকি রহমানে নামে সবার কাছে পরিচিত।
আখলাকুর রহমানের ফেসবুক আইডি ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, রাশিয়ায় এলব্রুস পর্বত জয়ের উদ্যেশে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ফ্লাইট চূড়ান্ত হয় পর্বত আরোহী আকি রহমানের। তবে ১৫ সেপ্টেম্বর করোনা টেস্টের প্রতিবেদন জমা দেন। ১৭ সেপ্টেম্বর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ডাক্তারি পর্রামশে ১৪ দিন হোম আইসোলেশন থাকার পর ৫ অক্টোবর করোনামুক্ত হন। সুস্থ হওয়ার দুদিন পর ইংল্যান্ড থেকে ৭ অক্টোবর রাশিয়ার ইউরোপের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এলব্রুস পর্বত জয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ৮ অক্টোবর স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় এলব্রুস ক্যাম্পে যোগ দেন। ওই দিনরাত ১টায় এলব্রুস পর্বত জয়ে অভিযান শুরু করে মাত্র ৮ ঘণ্টা সময়ে তিনি সকাল ৯টায় এলব্রুস পর্বতের চূড়ায় ওঠেন। এলব্রুস পর্বতের উচ্চতা ১৮ হাজার ৫১০ ফুট (৫৬৪২ মিটার)।
এর পূর্বে আখলাকুর রহমান চলতি বছরের ২২ জুলাই আফ্রিকা মহাদেশের সর্ববৃহৎ তানজানিযায় অবস্থিত কিলিমাঞ্জারো পর্বত প্রথমবারের মতো জয় করেন। এই পর্বতটির উচ্চতা ছিল ৫,৮৯৫ মিটার। এই পর্বত জয়ের সাতদিন পর দ্বিতীয়ভাবে মতো ২৯ জুলাই ইউরোপের মন্ট ব্ল্যাঙ্ক পর্বত চূড়ায় ওঠেন। অবিস্মরণীয়ভাবে করোনাকালে তিন মাসের মধ্যে তিনটি পর্বত জয়ী হন আকি রহমান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়া হাওর ব্যাষ্টিত চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের বাউধরন গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী মৃত হাজি ইছকন্দর আলীর ছেলে আখলাকুর রহমান প্রায় ৩৬ বছরে পূর্বে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে চলে যান। তখন তাঁর বয়স ছিল দেড়বছর। লন্ডনের ওল্ডহাম শহরে তিনি বেড়ে ওঠেন। সেখানে পরিবার পরিজন নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন। তবে নাড়ির টানে প্রায় প্রতিবছর জন্মভিটায় ছুটে আসেন। তবে এবছর করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে আসতে পারেননি।
দেশে অবস্থানরত আখলাকুর রহমানের খালাত্ব ভাই জগন্নাথপুর পৌরশহরের ইকড়ছই আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সামিনুর রহমান ভূঁইয়া জানান, দেড়বছর বয়সে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তিনি বিদেশে চলে যান। সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করলেও প্রতিবছরই তিনি গ্রামে বেড়াতে আসেন। মাত্র তিন মাসেই ধারাবাহিকভাবে তিনটি পর্বত জয় করে বিশ্বজুড়ে ইংল্যান্ডের পাশাপাশি বাংলাদেশের ভার্বমূতি উজ্জল করেছেন তিনি। তাঁর এই সফলতায় আমরা গর্বিত।
হাওর ব্যাষ্টিত উপজেলার চিলাউড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশ মিয়া বলেন, পর্বত আরোহী আকি আরমান আমাদের হাওরপাড়ের কৃতি সন্তান। তিনি বাঙালির অহংকার। আমি তাঁর ধারাবাহিক সফলতা প্রত্যাশা করছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।