জুমবাংলা ডেস্ক : গোপালগঞ্জ জেলা রোভার লিডার ও সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক গোলাম মোস্তাফার (জিএম) বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতির অভিযোগ। বাংলাদেশ স্কাউটস রোভার অঞ্চলের ইউনিট লিডার বেসিক কোর্সে সনদ জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে ওনার নামে।
আগামী ২০ এপ্রিল ২০২২ তারিখে গোপালগঞ্জ জেলা রোভার সপ্তম ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে নিজের ভোট বৃদ্ধি করার জন্য এ জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
চলতি বছরের গত ২৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ স্কাউটস রোভার অঞ্চলের আয়োজনে গোপালগঞ্জ জেলা রোভারের ব্যবস্থাপনায় গোপালগঞ্জ জেলা শিশু একাডেমিতে ৩৫২-তম রোভার স্কাউট ইউনিট লিডার বেসিক কোর্স অনুষ্ঠিত হয়। কোর্সটিতে প্রশিক্ষণের জন্য জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৪ জন শিক্ষক অংশ নেন। কোর্স শেষে তাদের সনদ প্রদান করে রোভার অঞ্চলের আঞ্চলিক উপ-কমিশনার (প্রশিক্ষণ) ও ওই কোর্সের কোর্স লিডার সিকদার রুহুল আমিন (এলটি)।
জানা যায়, ওই কোর্সে অংশগ্রহণকারীদের ২৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত জেলা শিশু একাডেমিতে অবস্থান করে কোর্সটি শেষ করতে হয়েছে। ওই কোর্সে কোটালীপাড়া উমাচরন সার্বজনীন উচ্চবিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক কামরুল ইসলাম ও সদর উপজেলার ডা. দেলোয়ার হোসাইন মেমোরিয়াল কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক হাফিজুর রহমানের নামে সনদ দেওয়া হয়। অথচ ওই দুইজন শিক্ষক কোর্সে আসেননি। না এসেই তারা তাদের নামে সনদ পেয়েছেন।
পরবর্তীতে জানা যায়, গোপালগঞ্জ জেলা রোভার লিডার ও সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক গোলাম মোস্তাফা সহকারী লিডার প্রশিক্ষক (এএলটি) টাকার বিনিময়ে ওই দুই শিক্ষকের নাম দিয়ে শাহিন ফকির ও খালিদ হোসেন নামের দুইজন যুবক দিয়ে কোর্সটি সম্পন্ন করান। যা কোর্সে অন্য প্রশিক্ষকদের জানতে দেওয়া হয়নি।
কোর্স শেষে ওই দুই যুবক (শাহিন ফকির ও খালিদ হোসেন) আপেক্ষ করে বলেন, কষ্ট করে কোর্স করলাম আমরা, কিন্তু নিজের নামে সনদ পেলাম না।
বিষয়টি জানতে শাহিন ফকিরের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, গোলাম মোস্তফা স্যার আমাকে কোর্স করার জন্য বলেন। কোর্স (নিবন্ধনের সময়) চলাকালে আমাকে বলেন তোমার নামের পরিবর্তে কামরুল ইসলামের নাম ও ঠিকানা লিখে দিতে। আমি তাই করেছি। স্যার আমাকে একটা উপকার করেছিলেন। সে জন্য তার প্রতি আমি দুর্বল ছিলাম।
এ বিষয় জানতে কোটালীপাড়া উমাচরন সার্বজনীন উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি বিদ্যালয়ে চাকরি করি আমার পক্ষে পাঁচ দিন ধরে সেখানে অবস্থান করে প্রশিক্ষণ নেওয়া সম্ভব নয়। মোস্তফা স্যার আমাকে প্রশিক্ষণে উপস্থিত থাকলে বলেছিলেন। কিন্তু আমি যাইনি। আমার নামে কিভাবে সনদ ইস্যু হলো তা আমি জানি না। এর সবকিছুই গোলাম মোস্তফা স্যার জানে।
গত ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ স্কাউটস রোভার অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর একেএম সেলিম চৌধুরী স্বাক্ষরিত পত্রে গোপালগঞ্জ জেলা রোভার লিডার ও সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক গোলাম মোস্তাফার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। ওই নোটিশে তাকে আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে কারণ দর্শানের জন্য বলা হয়েছে।
এদিকে, এই প্রশিক্ষণে যে সব শিক্ষক অংশগ্রহণ করেছেন সবাই একটি করে দল পরিচালনা করতে পারবেন। এ ছাড়া আগামী ২০ এপ্রিলের কাউন্সিলে তারা ভোট প্রদান করতে পারবেন। ওই কাউন্সিলে গোলাম মোস্তফা সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াই করবেন বলে জানা যায়।
গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে এর আগেও প্রশিক্ষকরা তাদের সঙ্গে অসদাচরণ, সনদ প্রদানে চাপ সৃষ্টি, হুমকি, অশালীন ও শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণের জন্য একধিকবার রোভার অঞ্চলে অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। পাঁচ দিন ধরে প্রশিক্ষণ হলো তখন কেউ প্রশ্ন করেনি, এখন কেন এই প্রশ্ন উঠছে? যারা প্রশিক্ষণ দিয়েছে তারাই সনদ পেয়েছে। এখন আমার বিরুদ্ধে শুধু শুধু দোষারোপ করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।