নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরে ধর্ষণের শিকার এক গৃহবধূকে মামলা তুলে নিতে একের পর এক হুমকি দিচ্ছে ধর্ষক ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। থানায় মামলা করার পর তারা বাসার বাইরে যেতেও ভয় পাচ্ছেন বলে জানান ওই গৃহবধূর স্বজনরা।
ওই গৃহবধূর স্বজনরা জানান, ধর্ষণের বিষয়টি আপস মীমাংসা করার জন্য ধর্ষক ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে ফোনে হুমকি দিচ্ছে। এমনকি র্যাব পরিচয়েও একাধিকবার তাদের ফোন করা হয়েছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনায় ধর্ষণে অভিযুক্ত ইমরান হোসেন ওরফে আনোয়ারের (৪৫) বিরুদ্ধে বাসন থানায় মামলা করা হয়। ইমরান গাজীপুর মহানগরের শহীদ রওশন সড়ক এলাকার মোফাজ্জল হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া। তিনি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার মৃত নয়ন খলিফার ছেলে।
ওই গৃহবধূর ভাই জানান, ঘটনার পর তার বোন আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষয়টি তিনি দেখে ফেলেন। পরে বোনের কাছে আত্মহত্যার কারণ জানতে চাইলে তার বোন তাকে পুরো ঘটনাটি খুলে বলে। এরপর তিনি প্রথমে গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানায় মামলা করতে যান। সদর থানায় গেলে পুলিশ জানায় ঘটনাটি বাসন থানার। তাদেরকে বাসন থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরদিন ১৮ ফেব্রুয়ারি তার বোন বাদী হয়ে গাজীপুর মহানগরের বাসন থানায় মামলা করেন। মামলার পর থেকে আসামি ইমরান হোসেন ওরফে আনোয়ার ও তার পক্ষের লোকজন তাদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাসুম হোসেন খানও ঘটনাটি মীমাংসা করার কথা বলেন। এখন তারা নানামুখী চাপের মধ্যে আছেন।
ওই গৃহবধূ বলেন, আমাকে চাকরি দেয়ার কথা বলে সরলতার সুযোগ নিয়ে লম্পট ইমরান সর্বনাশ করেছে। ঘটনার দিন আমি বারবার তাকে হাতে পায়ে ধরেও রক্ষা পাইনি। আমি ইমরানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
তিনি আরও বলেন, মামলা করার পর থেকেই আনোয়ার হোসেন ওরফে ইমরান ও তার স্বজনরা মোবাইলফোনে মামলা প্রত্যাহারের হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে আমাদেরকে এলাকা ছাড়া করা হবে। ইমরানের পক্ষ থেকে এলাকার বেশ কিছু লোকও মীমাংসার প্রস্তাব নিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে বাসন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম কাউসার আহমেদ চৌধুরী বলেন, হুমকির বিষয়ে রোববার থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। ভিকটিম ও তার পরিবারকে সর্বাত্মক আইনি সহযোগিতা দেয়া হবে। অভিযুক্ত ইমরান পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাসন থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুম হোসেন খান জানান, তিনি ভিকটিম ও তার পরিবারকে ধর্ষণ মামলা তুলে নেয়ার কথা বলেননি। কেবল তদন্তের কাজে তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে তারা থানায় জিডি করেছেন। সেটিও তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে ইমরান হোসেন ওরফে আনোয়ার চাকরি দেয়ার কথা বলে মোবাইল ফোনে ওই গৃহবধূকে বাসায় ডাকেন। বাসায় যেতে দেরি হওয়ায় ইমরান তার আরেক সহযোগী নারীকে তার বাসায় পাঠান। ওই নারীকে ভিকটিম প্রথমে ইমরানের স্ত্রী ভেবে তার সঙ্গে যান। বাসায় গেলে তাকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেন ইমরান। এতে রাজি না হলে ইমরান ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। ঘটনার সময় ইমরানের সহযোগী দরজায় পাহাড়া দেন।
http://চাকরি দেয়ার কথা বলে বাসায় ডেকে ধর্ষণ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।