জুমবাংলা ডেস্ক : নাটোরের গুরুদাসপুরে চার মাসে ৪০টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তমাল হোসেন। এসব বাল্যবিয়ে রুখতে তিনি কখনও বরযাত্রী বা কনেযাত্রী বেশে, আবার কখনও শিক্ষক, শিক্ষার্থী কিংবা সাধারণ মানুষের বেশে সেখানে হাজির হয়েছেন। কখনও গণমাধ্যম কর্মীদের, আবার কখনও জনপ্রতিনিধিকে তার এই উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত করছেন।
তিনি চলতি বছরের ১১ জুন গুরুদাসপুর উপজেলায় যোগদানের পর বাল্যবিয়ে, ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য শুরু করেন সামাজিক আন্দোলন। তিনি নিজের পরিকল্পনায় উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিলবোর্ড স্থাপন করেছেন। তার উদ্যোগে টানানো বিলবোর্ডে বাল্যবিয়ে ও ইভটিজিং কী এবং এর ফলে কী শাস্তির বিধান আছে তাও উল্লেখ করেছেন। এই কার্যক্রমে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান ও উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, ইউএনও তমাল হোসেনের এই কার্যক্রম উপজেলার সর্বত্র ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তিনি এই কর্মস্থলে যোগদানের এক সপ্তাহ পরই উপজেলার ছয় ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভায় বাল্যবিয়ে এবং ইভটিজিং বিষয়ে জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে মাইকিং এবং লিফলেট বিতরণ করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে সচেতনতামূলক সমাবেশ করেন।
এ ছাড়া ইউএনও তমাল হোসেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও বাল্যবিয়ে-বিষয়ক পেজ ও গ্রুপ খুলেছেন। তার এই কার্যক্রমের মাঝে সম্প্রতি চাপিলা ইউনিয়নের ধানুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী বিউটি খাতুন ইউএনওর দেওয়া নম্বরে ফোন দিয়ে নিজের বাল্যবিয়ে বন্ধ করে। পরে তাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে সাহসিকতার পুরস্কার।
উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, ইউএনও তমাল হোসেনের এই সামাজিক আন্দোলনের কথা এখন সবার মুখে মুখে। শুধু বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ নয়, বখাটেদের আইনের আওতায় এনে কারাদণ্ড দেওয়া ও জরিমানা করা হচ্ছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, ইউএনও তমাল হোসেন এখানে যোগদানের পর বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং, বখাটে ও মাদকের বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধ শুরু করেছেন। তার এ কার্যক্রম ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তমাল হোসেন বলেন, গুরুদাসপুরে বাল্যবিয়ে ও ইভটিজিংয়ের ঘটনা অনেক বেশি। সামাজিক এই আন্দোলনে বেশ সাড়া পাচ্ছি।
তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম ছড়িয়ে দিতে এবং মাদকমুক্ত রাখতে তাদের বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখার জন্য ইতোমধ্যে ৪২টি স্কুলের ৩০০ শিক্ষার্থীকে নিয়ে কুইজ প্রতিযোগিতা করা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী দিনে তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করে খেলাধুলার আয়োজন করার ইচ্ছা রয়েছে। বাল্যবিয়ে-মা’দকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে সাড়া ফেলেছেন এই ইউএনও
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।