জুমবাংলা ডেস্ক : নেত্রকোনার মদনে চিরকুমার প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল হোসেন চৌধুরী ওরফে মতিন চৌধুরীর মেয়ে পরিচয়ে ভাতা, বোনাসসহ অন্যান্য সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার ভাতিজির বিরুদ্ধে।
সাম্প্রতি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর জনৈক এক বীর মুক্তিযোদ্ধা এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর বিষয়টি সবার নজরে আসে।
অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের জঙ্গলডেমারগাতি গ্রামের মৃত. আওলাদ হোসেন চৌধুরীর ছেলে জহিরুল হোসেন চৌধুরী ওরফে মতিন চৌধুরী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার (গেজেট নং-২৪১৪), মুক্তিবার্তা নং-০১১৬০৯০৩২৭। তিনি অবিবাহিত থাকা অবস্থায় মারা যান।
তবে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার, স্থানীয় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও তৎকালীন মাঘান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হবুর জোগসাজশে জহিরুল হোসেন চৌধুরীর ছোট ভাই মিলন চৌধুরীর মেয়ে তানিয়া শারমিন তন্বীকে তানিয়া নামে জহিরুল হোসেন চৌধুরীর মেয়ে পরিচয় দিয়ে ভুয়া জন্মনিবন্ধন তৈরি করে দেন বলে অভিযোগ উঠে।
সেই নিবন্ধন মূলে ২০১৩ সালে তানিয়াকে কোনও প্রকার তদন্ত ছাড়াই জমাকৃত অর্থ উত্তোলনের ছাড়পত্র ও নতুন ব্যাংক হিসাব খোলার অনুমতি দেয় উপজেলা প্রশাসন। এরপর থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মিথ্যা পরিচয়ে মাসিক ভাতা, উৎসব ভাতা, বোনাসসহ বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করে আসছেন তানিয়া, যা সম্পূর্ণরূপে মুক্তিযোদ্ধা পোষ্য আইনের পরিপন্থী। এ ঘটনা ক্ষুব্ধ এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা।
মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে এ ধরনের ঘটনার দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা হাদিস উদ্দিন দুলাল ও সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আরশুজ্জামান খান বলেন, কয়েকজন দুর্নীতিবাজ ও অসৎ মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তৎকালীন কিছু কর্মকর্তার জোগসাজশে রাষ্ট্রের সঙ্গে এ প্রতারণা করা হয়েছে। আমরা ব্যক্তিগতভাবে জহিরুল হোসেন চৌধুরীকে চিনি। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আর তিনি অবিবাহিত ছিলেন। কিন্তু চিরকুমার এ মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর যখন তার ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেওয়ার কথা।
তার ভাতিজিকে মেয়ে পরিচয় দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে এবং প্রতিনিয়ত ভাতা উত্তোলনসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থার কথা জানান তিনি।
এ ব্যাপারে জন্মনিবন্ধন প্রদানকারী মাঘান ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হবু বলেন, জহিরুল হোসেন চৌধুরী চিরকুমার ছিলেন কিন্তু আমি তা জানতাম না। এই পরিবারটি এলাকার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি পরিবার। এমন স্বনামধন্য পরিবারের লোকজন আমার কাছে মিথ্যা বলে নিবন্ধন করিয়ে নিয়েছে এটা আমি নিবন্ধন দেওয়ার কয়েক দিন পর জানতে পারি।
অভিযুক্ত তানিয়া শারমিন তন্বীর বাবা মিলন চৌধুরী জানান, আমার ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল হোসেন চৌধুরী অবিবাহিত ছিলেন।
ভাতা উত্তোলনের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি মোবাইল ফোন কেটে দেন। পরে বারবার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শাহজামান আহম্মেদ বলেন, এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে তদন্ত করার দায়িত্ব দিয়েছেন।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও ইউএনও বুলবুল আহমেদ জানান, এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ভাতা বন্ধ রাখার জন্য ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। সূত্র : সময় নিউজ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।