জুমবাংলা ডেস্ক : শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার সরকারি শামসুর রহমান কলেজের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে তাঁর তৃতীয় স্ত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর। তিনি কলেজটির হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. মামুন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক লোকমান হোসেন স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
মামুন বরিশালের মুলাদী থানার সেলিমপুর গ্রামের কাদের হাওলাদারের ছেলে। মামুনের তৃতীয় স্ত্রী মোসাম্মৎ তামান্না একই থানার পশ্চিম বানীমর্দন এলাকার দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে। মামুনের আগের দুটি বিয়ে বিচ্ছেদ হয়েছে। এর আগে কলেজের এক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের জেরে দাম্পত্য কলহ দেখা দিলে স্ত্রীর মামলায় দুইবার জেলও খাটেন মামুন।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি তামান্নার সঙ্গে মামুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেন তামান্না। মামলায় দুবার জেল খাটেন মামুন। দাম্পত্যজীবন পুনর্বহালের আপস মীমাংসার অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করে বরিশালের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জামিন নেন।
কিন্তু জেল থেকে বের হয়ে আর খোঁজখবর নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ তামান্নার। পরে মামলার নথি ও অন্যান্য কাগজপত্রসহ সরকারি শামসুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগের কপি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরেও পাঠান তামান্না। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফজলুল হক ফৌজদারি মামলায় প্রভাষক মামুনের জেলহাজতে থাকার বিষয়টি জানিয়ে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর চিঠি পাঠান।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ মার্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক লোকমান হোসেন স্বাক্ষরিত এক নোটিশে মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন— সরকারি মাদারীপুর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. জামান মিয়া, শরীয়তপুর সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিজানুর রহমান, সরকারি মাদারীপুর কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বেদানন্দ হালদার।
অভিযোগের বিষয়ে তামান্না বলেন, আগের দুটি বিয়ের কথা গোপন রেখে আমাকে বিয়ে করলেও আমি মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু সে এখন আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা না দিয়ে এক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দাম্পত্য অশান্তি শুরু হয়। আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা এলাকায় ছড়িয়েছে। শেষ পর্যন্ত স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য হয়েছি।
অভিযোগ ও তদন্তের বিষয়ে মামুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন হাতে সময় কম, অন্য একদিন সময় নিয়ে আসেন, বিস্তারিত বলব। শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্তের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফজলুল হক বলেন, প্রভাষক মামুনের স্ত্রীর অভিযোগ ও মামলার কাগজপত্রসহ করণীয় সম্পর্কে জানতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পত্র প্রেরণ করেছি। তবে অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির নোটিশের কোনো চিঠি এখনো হাতে পাইনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।