জুমবাংলা ডেস্ক : ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া এক যুবককে নির্যাতিত তরুণীকে বিয়ের শর্তে গত বুধবার জামিন (অস্থায়ী) দেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে আসামি ও তরুণীর মধ্যে বিয়ে হয়েছে। তবে তরুণীর মাকে আসামি (বর) জানিয়েছেন, তাঁর পরিবারের বিরোধিতার কারণে এখনই তিনি স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে তুলতে পারবেন না। এদিকে ধর্ষণ মামলাটি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে দাবি করেছে আসামির পরিবার। ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের।
আসামি বিপ্লব চক্রবর্তী (৩০) ইব্রাহিমপুরের প্রাণেশ চক্রবর্তীর ইতালিফেরত ছেলে। বাবাহারা দরিদ্র তরুণী (১৯) মামলার বাদী। মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বিপ্লব গত ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যারাতে ওই তরুণীকে ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। এই ঘটনা গ্রামে জানাজানি হলে ভুক্তভোগী তরুণী পরের দিন নবীনগর থানায় মামলা করেন। রাতে পুলিশ আসামি বিপ্লবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠায়। তিন মাস ধরে আদালতে বারবার আবেদন করেও জামিন পাননি বিপ্লব।
পরে দুই পক্ষ আসামি ও বাদীর মধ্যে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। এ অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন এ মামলার বাদী নিজেই বিপ্লবকে জামিন দিতে আদালতে আবেদন জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার আদালত বাদীকে বিয়ে করার শর্তে বিপ্লবের অস্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার বাদীর মা গতকাল দুপুরে এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আইনজীবীদের পরামর্শে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে ধর্ষক আমার মেয়েকে (নির্যাতিতা) বিয়ে করতে রাজি হওয়ায় কাগজপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়। এর পরই আদালত আমার মেয়েকে বিয়ের শর্তে ধর্ষককে অস্থায়ী জামিন দেন। ধর্ষকের পরিবার জামিন চাইতে মামলাসংক্রান্ত খরচ চালানোর জন্য আমাকে দুই লাখ টাকা দিয়েছে। আর আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ জীবনের নিরাপত্তার জন্য আট লাখ টাকা দেবে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। আজ রাতেই (গতকাল) ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কালভৈরব মন্দিরে হিন্দুরীতিতে দুজনের (আসামি ও বাদী) বিয়ের পর আমরা ছেলে-মেয়েকে নিয়ে গ্রামে ফিরব।’
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নির্যাতিত তরুণীকে বিয়ের শর্তে আসামিকে অস্থায়ী জামিন দেন। সুতরাং আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হলে, জামিন বাতিলসহ আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বিপ্লব চক্রবর্তীর সঙ্গে চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি। তবে তাঁর কাকা নবীনগর আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট বিনয় চক্রবর্তী ফোনে বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনাটি মিথ্যা। আমাদের ঐতিহ্যবাহী পরিবারকে সমাজে হেয়প্রতিপন্ন করতেই একটি কুচক্রীমহল পরিকল্পিতভাবে এ মিথ্যে ধর্ষণের ঘটনাটিকে সাজিয়ে আমার ভাতিজাকে জেলে পাঠায়।’
ধর্ষণ মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা নবীনগর থানার এসআই মিশন বিশ্বাস বলেন, ‘জামিন দেওয়ার এখতিয়ার আদালতের রয়েছে। তবে ধর্ষণের মামলাটি আইনের নিজস্ব গতিতেই চলবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।