জুমবাংলা ডেস্ক : হজ তিন প্রকার: তামাত্তু, ইফরাদ, কিরান। এর মধ্যে সওয়াবের দিক দিয়ে সর্বাধিক উত্তম হলো কিরান, এরপর তামাত্তু, এরপর ইফরাদ। তবে আদায় সহজ হওয়ার দিক থেকে প্রথমে তামাত্তু, এরপর ইফরাদ, এরপর কিরান।
তামাত্তু হজ পালন করা সবচেয়ে সহজ, তাই অধিকাংশ বাংলাদেশি তামাত্তু হজ আদায় করে থাকেন। আর যারা অন্যের বদলি হজ করতে যান বা যাদের অবস্থান মিকাতের মধ্যে, তারা সাধারণত ইফরাদ হজ করেন। এছাড়া কিছুসংখ্যক হাজি কিরান হজ করেন, যাদের সংখ্যা খুবই নগণ্য।
হজে কিরান: মিকাত থেকে একসঙ্গে উমরাহ ও হজের নিয়তে ইহরাম বাঁধাকে কিরান হজ বলা হয়। কিরান হাজিগণকে মক্কায় পৌঁছে প্রথমে উমরাহ করতে হবে। অতঃপর ইহরাম অবস্থায় হজের জন্য অপেক্ষা করতে থাকবেন এবং ১০ জিলহজ দমে শুকরিয়া তথা কোরবানি না করা পর্যন্ত ইহরাম অবস্থায়ই থাকতে হবে। কিরান হজের ক্ষেত্রে তাওয়াফে কুদুম করা সুন্নত। তাই উমরাহ ও হজের মধ্যবর্তী যেকোনো সময় একজন হাজী তাওয়াফে কুদুম করবেন; সম্ভব হলে সায়ীও করে নেবেন।
মনে রাখতে হবে, যদি কোনো কিরান হাজি তাওয়াফের সঙ্গে সায়ী করেন, তবে তাকে ১০ জিলহজ ফরজ তাওয়াফের পর আর সায়ী করতে হবে না। কেননা, উমরাহ ও হজের বিধানে একবার করে সায়ী করা ওয়াজিব। এ ছাড়া ৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত হজের আহকামসমূহ সব হাজির জন্য এক ও অভিন্ন।
হজে ইফরাদ: মিকাত থেকে শুধু হজের নিয়তে ইহরাম বাঁধাকে ইফরাদ হজ বলে। ইফরাদ হাজিগণ পবিত্র মক্কায় পৌঁছে ইহরাম অবস্থায় হজের জন্য অপেক্ষা করতে থাকবেন। অতঃপর মূল হজ শুরু হওয়ার আগে যেকোনো একদিন সুন্নত তাওয়াফ তাওয়াফে কুদুম করবেন, সম্ভব হলে সায়ীও করে নেবেন। কিরান হজের মতো এ ক্ষেত্রেও তাওয়াফে কুদুমের সঙ্গে সায়ী করে নিলে ১০ জিলহজ ফরজ তাওয়াফের পর আর সায়ী করতে হবে না।
আর ৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত হজের বাকি আহকাম সবার জন্য এক ও অভিন্ন। শুধু পার্থক্য হলো, ১০ জিলহজ কঙ্কর নিক্ষেপের পর কিরান ও তামাত্তু হাজিগণকে হজের ওয়াজিব অঙ্গ দমে শুকরিয়া তথা কোরবানি করতে হবে, কিন্তু ইফরাদ হাজিগণকে কোরবানি করতে হবে না।
হজে তামাত্তু: মিকাত থেকে শুধু উমরাহর নিয়তে ইহরাম বেঁধে পবিত্র মক্কায় পৌঁছে উমরাহ করার পর ইহরাম খুলে স্বাভাবিক অবস্থায় হজের জন্য অপেক্ষা করা এবং ৮ জিলহজ ইহরাম বেঁধে হজ সম্পন্ন করাকে তামাত্তু হজ বলে। ৮ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত কিরান ও ইফরাদ হজের মতো তামাত্তু হজের সব বিধান এক ও অভিন্ন। তবে পার্থক্য হলো, তামাত্তু হজে কিরান, ইফরাদের মতো তাওয়াফে কুদুম নেই।
উল্লেখ্য, সাগরপথে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের মিকাত হলো ইয়ালামলাম। কিন্তু আকাশপথে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের মিকাত হবে কারনুল মানাযিল; যা জেদ্দা এয়ারপোর্টের আগে থেকেই শুরু হয়। সুতরাং, যারা বাংলাদেশ থেকে জেদ্দা হয়ে প্রথমে পবিত্র মক্কায় যাবেন, তাদের বাংলাদেশ থেকে বিমানে আরোহণ করার পূর্বেই ইহরাম বেঁধে নিতে হবে। আর যারা বাংলাদেশ থেকে জেদ্দা হয়ে প্রথমে মদিনা মুনাওয়ারায় যাবেন, তাদের মিকাত হবে যুলহোলাইফা; যা বর্তমানে বীরে আলী নামে পরিচিত, এখান থেকে ইহরাম বেঁধে পবিত্র মক্কায় প্রবেশ করবেন।
লেখক: মুফতি হেলাল উদ্দীন হাবিবী, মুফাসিসরে কুরআন, ইসলামী গবেষক ও খতিব
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।