আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের কয়েকটি দেশসহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন নয়াদিল্লির নিজামুদ্দিন মসজিদের তাবলিগ জামায়াতে। পাঁচটি ট্রেনে ভ্রমণ করে ওই তাবলিগে অংশ নিয়েছিলেন তারা। এ থেকেই সেখানকার অন্তত ১৩৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। এ ছাড়া ট্রেনগুলোতে যে সব যাত্রী ভ্রমণ করেছেন, তারা সবাই করোনার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
ভারতীয় সরকারি সংবাদ সংস্থা পিটিআই তাদের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর থেকে দিল্লিগামী দুরন্ত এক্সপ্রেস, চেন্নাইগামী গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক এক্সপ্রেস, তামিলনাডু এক্সপ্রেস, নয়াদিল্লি-রাঁচি রাজধানী এক্সপ্রেস এবং এপি সম্পর্ক ক্রান্তি এক্সপ্রেসে চড়ে হাজার হাজার যাত্রী নয়াদিল্লির নিজামুদ্দিন মসজিদে তাবলিগ জামায়াতে অংশ গ্রহণ করে। গত ১৩ থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত এ যাত্রায় প্রত্যেকটি ট্রেনেই তাবলিগ জামায়াতের লোকজন ছিলেন।
নয়াদিল্লির ওই তাবলিগ জামায়াতে অংশ নিতে ট্রেনগুলোতে ভ্রমণ করা অধিকাংশ যাত্রী একে অপরের সংস্পর্শে এসেছিলেন। তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে ভারতের রেলওয়ে বিভাগ।
মোট কতজন যাত্রী টেনগুলোতে ভ্রমণ করেছিলেন, তা জানতে না পারলেও রেলওয়ের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, প্রতিটি ট্রেনেই ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছেন। প্রত্যেক জেলা প্রশাসনকে সব যাত্রীর তালিকা দিয়েছে ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। নয়াদিল্লির তাবলিগে কারা অংশ নিয়েছিলেন, তা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, গত ১৩ মার্চ তাবলিগ থেকে ইন্দোনেশিয়ার অন্তত ১০ নাগরিক এপি সম্পর্ক ক্রান্তি এক্সপ্রেসে আসামের করিমনগরে গিয়েছিলেন, যাদের শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়েছে। এ ছাড়া প্রায় ৬০ জন যাত্রী নয়াদিল্লি-রাঁচি রাজধানী এক্সপ্রেসে বি১ কোচে ছিলেন। কোচটিতে করোনা আক্রান্ত এক মালয়েশীয় নারী ছিলেন।
ওই মালয় নারীর সঙ্গে ভ্রমণরত আরও ২৩ জনের শরীরেও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। ঝাড়খণ্ডের কয়েকজন বাসিন্দা ওই ট্রেনে ছিলেন। ওই নারীর মাধ্যমেই ঝাড়খণ্ডের প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটে।
রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, হজরত নিজামুদ্দিন ও নয়াদিল্লি স্টেশন দুটিই দেশের অন্যতম ব্যস্ত রেলস্টেশন। নিজামুদ্দিনে রতিদিন ৫৬টি দূরপাল্লারসহ আরও ১৩০টি ট্রেন যাতায়াত করে। নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে ৬২টি ট্রেন ছাড়ে। এখানে দাঁড়ায় ৭৬টি ট্রেন। তাই কারা কারা করোনা সংক্রমিত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তার চিহ্নিত করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। জেলা প্রশাসনের পক্ষেও এটি কষ্টসাধ্য।
উল্লেখ্য, ভারতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৩৭ জন। মারা গেছেন ৪৫ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৪৮ জন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।