লাগাম টানা যাচ্ছে না পেঁয়াজের দামে। ভারত থেকে আমদানি বন্ধ ও দেশে ‘সংকট’র অজুহাত দেখিয়ে দেড় মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই বাড়ানো হয়েছে এর দাম। বিশেষ করে গত দুই দিনে এর দাম অস্থির করে তুলেছে রাজধানীসহ সারা দেশের পেঁয়াজের বাজার। রীতিমতো অধিকাংশ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে চলে গেছে নিত্যদিনের এ পণ্যটি। এ অবস্থায় সুসংবাদ দিল রাজধানীর কারওয়ানবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী ও আড়ৎদাররা।
তারা বলছেন, গতকালকের তুলনায় আজ পাবনাসহ কয়েকটি জায়গা পাইকারী বাজারে পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজিতে ১০ টাকা করে কমেছে। আগামীকাল ঢাকাতেও ১০ টাকা করে কমবে। কারওয়ানবাজারের কয়েকজন পাইকারী ব্যবসায়ী ও আড়ৎদারের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে পাবনা থেকে কারওয়ানবাজারে পেঁয়াজ সরবরাহকারী পাইকারী ব্যবসায়ী নিতাই বাবু বলেন, আজকে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম ২২০-২৩০ টাকা চলছে। তবে আগামীকাল ঢাকা পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমতে পারে। কারণ আজকে পাবনায় প্রতিমণে ৩০০-৪০০ কমে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। পাবনার পেঁয়াজ আজ রাতের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাবে, ভোরে এসব পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে।
কারওয়ানবাজারের আড়ৎদার মমতাজ এন্টারপ্রাইজের মালিক কাজী মো. মোস্তফা বলেন, পেঁয়াজ কম দামে আমদানি করে সিন্ডিকেট করে মানুষের বিরুদ্ধে হতাশা সৃষ্টি করে। যারা আমাদানি করছে তারা ১০ জন আমদানি করলে দুজন বাজারে ছাড়ে। আর বাকি আটজনেই বেশি লাভের আশায় পেঁয়াজ গোডাউনে মুজত করে রাখে।
সরকারকে এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান এ ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, একজন আমদানিকারক পেঁয়াজ আমদানি করে কেজিতে ৫ বা ১০ টাকা লাভ করতে পারে, এ জন্য সরকার নীতিমালা করে দিলে ভালো হয়। তবে আশার কথা হচ্ছে আজকে পাবনাসহ দেশের কয়েকটি এলাকায় পেঁয়াজের দাম কমেছে। আগামীকালও ঢাকায় পেঁয়াজের দাম কমবে।
খুচরা বিক্রেতারা আমাদের কাছ থেকে কম দামে কিনলেও দু-এক দিন আগের বেশি রেটেই বিক্রি করে উল্লেখ মোস্তফা বলেন, আমাদের কাছ থেকে খুচরা বিক্রেতারা ২২০ টাকা করে পেঁয়াজ কিনলেও তারা বিক্রি করে ২৬০ টাকা, তাদের আসলে বিক্রি করা উচিত ছিল ২৩০ টাকা। খুচরা বিক্রেতাদের সর্বোচ্চ ১০ টাকা লাভ করা উচিত। কিন্তু তারা অতিরিক্ত লাভ করে।
এ আড়ৎদার বলেন, আমি পাবনা, ফরিদপুর আর রাজবাড়ীর পেঁয়াজ আনি। এসব দেশি পেঁয়াজের দাম একটু বেশি থাকে। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কিছুটা কম। আমদানি করা পেঁয়াজ কম দামে আনলেও বাজারে ছাড়ে দেরি করে।
দেশি পেঁয়াজ আর কত দিনের মধ্যে উঠবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পাতা পেঁয়াজ উঠা শুরু করেছে। আর এ মাসের শেষের দিকেই পেঁয়াজ উঠা শুরু করবে। তখন প্রতিদিন কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমতে শুরু করবে।
কারওয়ানবাজারের আরেক আড়ৎদার মেসার্স মাতৃভান্ডারের মালিক কালাম শেখ বলেন, কৃষক পেঁয়াজ ধরে রাখে, দাম উঠলে বিক্রি করে। দেশের বাইর থেকে বেশি বেশি আমদানি করা সম্ভব হলে পেঁয়াজের বাজার এমনিতেই কমে আসবে। যদি আগেই বাণিজ্যমন্ত্রী বিভিন্ন আমদানিকারকের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিতো যে, চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ আমদানি কর এবং সে অনুযায়ী যদি আমদানি হতো তাহলে বাজারে এ অবস্থার সৃষ্টি হতো না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।