নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা পিপিএস পাইপ অ্যান্ড প্লাস্টিক কারখানায় ডাকাতির সময় ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ ও স্থানীয়রা। সোমবার (২৮ জুলাই) রাত ১১টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটককৃতদের মধ্যে দুইজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এই কারখানাটি আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। দল ক্ষমতা হারানোর পর গত ৫ আগস্ট এটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে কারখানাটি ইসলামী ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক শ্রীপুর শাখার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “রাত ১১টার দিকে কারখানার তৃতীয় তলায় সন্দেহজনক কিছু গতিবিধি দেখতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও স্থানীয়দের জানালে তাঁরা ঘটনাস্থলে আসেন। ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করলেও ছয়জনকে ধরা সম্ভব হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ১০–১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল প্রথমে প্রাচীর টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর নিরাপত্তা প্রহরীকে হাত-পা বেঁধে মারধর করে তাঁরা লুটপাটে নামে।
নিরাপত্তা প্রহরী মো. মকবুল হোসেন বলেন, “গেট টপকে কয়েকজন আমার ওপর চড়াও হয়। আমাকে বেঁধে মারধর করে রেখে দেয়। পরে যখন লোকজন আসতে শুরু করে, তখন ডাকাতেরা দেয়াল টপকে পালাতে শুরু করে।”
আটক ডাকাতরা হলো ময়মনসিংহের বাঘটিয়ার মো. সোহেল মিয়া (৩২), তারাকান্দার মো. এমদাদুল হক (৪৫), বগুড়ার কামুলার মো. ফারুক (৩২), নওগাঁর রাজাপুরের আরিফ (৩০), নরসিংদী বালুর মাঠ এলাকার সীমান্ত (২১) ও চাঁদপুরের মতলবপুরের ইব্রাহীম (২৩)
তাঁদের সবাইকে স্থানীয় জনতা পিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. আজগর হোসেন সোহাগ জানান, “রাত ১২টার দিকে ছয়জন আহত অবস্থায় পুলিশ তাঁদের নিয়ে আসে। চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, তবে গুরুতর আহত সোহেল ও এমদাদুলকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
শ্রীপুর থানার ওসি মো. আব্দুল বারিক বলেন, “কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। ডাকাতরা যন্ত্রপাতি লুট করতে এসেছিল। স্থানীয়দের সহায়তায় ছয়জনকে ধরতে সক্ষম হই। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। ধৃতরা আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।”
উল্লখ্য, ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এইচ টি ইমাম স্বয়ং পিপিএস কারখানার ওয়েবসাইট উদ্বোধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিক পালাবদলের পর প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং বর্তমানে এটি ইসলামী ব্যাংকের দায়বদ্ধ সম্পদ হিসেবে রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।