জুমবাংলা ডেস্ক : পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে শ্বশুরবাড়ি থেকে জামাতা মো. আরিফুল ইসলাম (২৫) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে পুলিশ খবর পেয়ে স্বরূপকাঠি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরবাড়িতে শ্বশুর ইউনুস কবিরাজের বাড়ি থেকে আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের সাথে একটি চিরকুট পাওয়ার কথা জানান নিহত আরিফের স্ত্রী সাদিয়া। ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার রাতেই আরিফকে উপজেলার জলাবাড়ী ইউনিয়নের আরামকাঠি এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
ছেলের মৃত্যুকে হত্যা দাবি করে আরিফের মা শাহানাজ পারভীন জানান, তার স্বামী সাইদুর রহমান সান্টু সৌদি আরবে থাকেন। সাত মাস পূর্বে তার বড় ছেলে আরিফের সাথে স্বরূপকাঠি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনুস কবিরাজের মেয়ে সাদিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই সাদিয়ার ফেসবুক ব্যবহারকে কেন্দ্র করে আরিফের সাথে তার দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আরিফ সাদিয়ার মোবাইল ফোন নিয়ে গেলে তাদের কলহ আরো বেড়ে যায়। এর কিছুদিন পরে সাদিয়া বাবার বাড়িতে চলে গেলে আরিফ তাকে মোবাইলটি ফেরত দেন এবং স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতে থাকেন।
পরে সাদিয়ার মোবাইল ব্যবহারকে কেন্দ্র করে আরিফ ও সাদিয়ার মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো, যা নিয়ে এলাকায় কয়েকবার সালিস বৈঠক হয়। শাহানাজ বেগম আরো অভিযোগ করেন, আরিফের সাথে বিয়ের আগে অন্য একটি ছেলের সাথে সাদিয়ার বিয়ে হয়েছিল। একই অভিযোগে সেই সংসারও তার টেকেনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে সাদিয়া সেজেগুজে অন্য এক ছেলের সাথে দেখা করতে যান। এ নিয়ে ওই দিন রাতে আরিফের সাথে সাদিয়া ও শ্বশুর ইউনুসের ঝগড়া হয়। সকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে ছেলের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। তার অভিযোগ, পুত্রবধূর পরকীয়ায় বাধা দেওয়াতেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার ছেলেকে হত্যা করেছেন।
এ ব্যাপারে সাদিয়া জানান, আরিফ নেশায় আসক্ত ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে আরিফ তাকে মারধর করে একাই রুম বন্ধ করে শুয়ে পড়েন। পরদিন সকালে অনেক ডাকাডাকি করার পরেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, ঘরের আড়ার সাথে শাড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস নিয়েছেন আরিফ। সেখান থেকে লাশ নামিয়ে তারা খাটে শুইয়ে রেখে পুলিশে খবর দেন। একই সাথে তারা রুমের বেড়ায় কাপড়ে ‘মা আমাকে মাফ করিস, সাদিয়ার জ্বালা আর সহ্য করতে পারছি না’ লেখা একটি চিরকুট পাওয়া যায় বলে জানান সাদিয়া।
পরে চিরকুটটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন অনেকে। তবে চিরকুটটি না দেখানো হলেও তা কোথায় কিভাবে রাখা ছিল ইত্যাদি সাদিয়া নিজেই এই প্রতিবেদককে বলেছেন। এসংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রতিবেদকের সংগ্রহে রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নেছারাবাদ থানার এসআই হেমায়েত উদ্দিন বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে আরিফের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চিরকুট এখনো আমরা হাতে পাইনি। সেটা উদ্ধারে অনুসন্ধান চলছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।