ঘি ও মাখন—দুটিই গবাদিপশুর দুধ থেকে তৈরি। স্বাদের দিক থেকেও কাছাকাছি। তাহলে পুষ্টিগুণও কি একই। ঝটপট তৈরি করা যায়, এমন খাবার চাই সকালে। তবে তাতে থাকা চাই যথাযথ পুষ্টিগুণ, যা জোগাবে সারা দিন কাজ করার ক্ষমতা ও শরীরের প্রয়োজনীয় বিপাকীয় শক্তি। দ্রুত সকালের খাবার হিসেবে অনেকেই বেছে নেন পাউরুটি কিংবা টোস্ট। সঙ্গে মাখন কিংবা ঘি। কিন্তু মাখন নাকি ঘি, কোনটি বেছে নেওয়া উচিত? কোনটি স্বাস্থ্যসম্মত? পুষ্টিগুণে এগিয়ে কে? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ভারতীয় উপমহাদেশের রান্নায় বহু আগে থেকেই বেশ প্রচলিত মাখন ও ঘি। মূলত একটু গরম আবহাওয়ায় মাখন দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। ঘি বানানোর প্রচলন শুরু হয় মাখনের পচে যাওয়া রোধ করতে। তার মানে, মাখনকে পরিশোধিত করে তৈরি করা হয় ঘি। তাই ঘিকে ফ্রিজে রাখা ছাড়াই ভালো রাখা যায় অনেক সপ্তাহ। নারকেল তেলের মতো ঠান্ডায় রাখলে এটি জমে কঠিন রূপ নেয়। শুধু খাওয়াদাওয়া নয় , ভারতীয় চিকিৎসাশাস্ত্র আয়ুর্বেদে এর বহুবিদ ব্যবহার উল্লেখ আছে।
ঘি আর মাখন—দুটির স্বাদই প্রায় কাছাকাছি। দুটিই তো দুধ থেকে তৈরি। তাহলে পার্থক্যটা কোথায়। এক টেবিল চামচ ঘিতে ১২৩ ক্যালরি, ১৪ গ্রাম ফ্যাট, ৯ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। আর থাকে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ১৩ শতাংশ ভিটামিন এ, ৩ শতাংশ ভিটামিন ই ও ১ শতাংশ ভিটামিন কে।
একই পরিমাণ মাখনে ১০০ ক্যালরি, ১১ গ্রাম ফ্যাট, ৭ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। আর ভিটামিন এ, ভিটামিন ই ও ভিটামিন কে থাকে যথাক্রমে ১১, ২ ও ১ শতাংশ। পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, ঘিতে মাখনের তুলনায় সামান্য ফ্যাট বেশি থাকলেও এটি খারাপ বা ক্ষতিকর নয়। ঘিয়ে যে ফ্যাট রয়েছে, তার মধ্যে বেশির ভাগই উপকারী ফ্যাট। শারীরবৃত্তীয় নানা কাজে এসব উপকারী ফ্যাটের প্রয়োজন হয়। তা ছাড়া ঘি ত্বকের পক্ষেও ভালো। ঘিয়ে থাকা ভিটামিন ই এবং কে ত্বককে সজীব ও উজ্জ্বল করে।
আর ঘিতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। মাখনে যা খুব অল্প পরিমাণে থাকে। আর ঘি তৈরির প্রক্রিয়া যেহেতু ল্যাকটোজ ও ক্যাসেইন ভেঙে যায়, তাই যাঁদের শরীর ল্যাকটোজ সহনশীল নয়, তাঁরাও এই দুগ্ধজাত খাবারের স্বাদ নিতে পারেন। এদিক থেকে ঘি একটু এগিয়ে আছেই বলা যায়। তা ছাড়া সব পুষ্টিগুণই প্রায় সমান। তাই মাখন–ঘি যা–ই বেছে নিন, পার্থক্য খুব বেশি নয়। তবে আমেরিকার অ্যাজমা ও অ্যালার্জি ফাউন্ডেশনের মতে, ল্যাকটোজ ও কেসিনে অ্যালার্জি থাকলে মাখন আর ঘি উভয়ই এড়িয়ে চলা ভালো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।