জুমবাংলা ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে গতকাল আরও ২২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৪, পটুয়াখালী ও ভোলায় তিনজন করে, পিরোজপুরে চার, নরসিংদীতে দুই এবং নোয়াখালী, ঝিনাইদহ, লালমনিরহাট, খাগড়াছড়ি, দিনাজপুর ও বরগুনায় একজন করে। এর আগে ১৪ জন প্রাণ হারান। সব মিলে গতকাল পর্যন্ত প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালে প্রাণ হারালেন ৩৬ জন।
এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে জনপদ তলিয়ে যাওয়াসহ ফসলি জমি ও মৎস্য ঘেরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রাজধানীতে ৫০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। সারাদেশের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। বিস্তারিত তুলে ধরা হলো-
রাজধানীতে রিমালের প্রভাবে ঝড়, বৃষ্টি ও বাতাসে পৃথক ঘটনায় বিদুৎস্পৃষ্টে দুই নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- মরিয়ম বেগম (৪৫), মো. রাকিব (২৫), লিজা আক্তার (১৫) ও এরশাদ। এদের মধ্যে যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা থানা এলাকায় একজন করে এবং খিলগাঁও এলাকায় দুজনের মৃত্যু হয়। যাত্রাবাড়ী থানার দরবার শরিফের সামেদ ভুঁইয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া লিজা। তিনি বাসার পাশে টিনের প্রাচীর স্পর্শ করলে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নোয়াখালীর চরজব্বার উপজেলার মো. সিরাজ খানের মেয়ে লিজা। একই দিন রাতে খিলগাঁও সিপাহিবাগ এলাকায় আইসক্রিম গলিতে বৃষ্টির পানি দিয়ে যাওয়ার সময়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে স্পর্শ লেগে অচেতন হয়ে পড়ে মরিয়ম। পরে তাকে ঢামেক হাসাপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বরগুনার বেতাগী উপজেলার মধু খাঁর মেয়ে মরিয়ম। বর্তমানে তিনি সিপাহিবাগ এলাকায় থাকতেন।
খিলগাঁও থানার তালতলায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা গ্যারেজে রেখে চার্জে দেওয়ার সময়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অচেতন হয়ে পড়েন রাকিব। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঝালকাঠি সদর উপজেলার উত্তর চরাইল গ্রামের মো. দুলাল মিয়ার ছেলে রাকিব।
রাজধানীর ডেমরায় একটি গ্যারেজে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এরশাদ (২৭) নামে এক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় ডগাইর বাজারের মাজার রোডে মাহবুবের গ্যারেজে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এরশাদের স্ত্রী হালিমা আক্তার জানান, সন্ধ্যায় কাজ শেষে অটো রিকশা নিয়ে গ্যারেজে ফেরেন এরশাদ। অটোরিকশাটির ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক সূত্র জানায়, সোমবার দিনভর বৃষ্টির কারণে রিকশার গ্যারেজটিতে পানি জমে ছিল। পানির ওপরই অটোরিকশাটি রেখে ব্যাটারি চার্জ করছিলেন এরশাদ।
ভোলা : ভোলায় রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে রিমালের তান্ডব শুরু হয়। রবিবার ও সোমবার দুই দিনের ঝড়-বৃষ্টিতে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের মাঝিরহাট গ্রামের ফারুক (৪০) নামে এক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। দৌলতখান উপজেলার পৌর ২ নম্বর ওয়ার্ডে গাছ উপড়ে পড়ে ঘরের ভিতর চাপা পড়ে মাইশা নামে ৪ বছরের এক শিশু মারা যায়। একই উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের লেচপাতা গ্রামে আবুল কাশেম (৬০) ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ঘরের নিচে চাপা পড়ে মনেজা খাতুন নামের পঞ্চাশোর্ধ্ব এক নারীর মৃত্যু হয় এবং সাচড়া ৬ নম্বর ওয়ার্ড পঞ্চায়েত বাড়ির জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েত (৪৮) নামে এক ব্যক্তির পেটে গাছের ডাল ভেঙে ঢুকে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ছাড়াও বোরহানউদ্দিন উপজেলার পক্ষীয়া ইউনিয়নে ঝড়ের পর বাগানে কাজ করতে গিয়ে শাপের কামড়ে আবু সাঈদ (৫৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে ভোলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে ফসলের খেত, পুকুরের মাছ ও সবজি, রাস্তা, বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভোলার চরফ্যাশনের চরপাতিলা, চর নিজাম, মনপুরা, ঢাল চরসহ মেঘনা-তীরবর্তী এলাকাগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানির উচ্চতায় গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ডুবে ছিল বিভিন্ন এলাকা। খোলা আকাশের নিচে অনেক পরিবার।
পিরোজপুর : পিরোজপুর সদর উপজেলায় একজন এবং ভান্ডারিয়া উপজেলায় পানিতে ডুবে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। পিরোজপুর জেলার ৭ হাজার ৮৮৬ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলায় ১০ হাজার পুকুর ঘের জলাশয় প্লাবিত হয়েছে। এতে ১ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ভেসে গেছে। জেলার সাত উপজেলার ১ হাজার ৫০০ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ৫ হাজার ৮০০ ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে।
পটুয়াখালী : জেলার বাউফল ও দুমকীতে দুই বৃদ্ধ ও আশ্রয় কেন্দ্রে বোন ও ফুফুকে নিয়ে আসতে যাওয়ার সময় পানির তোড়ে ভেসে গিয়ে কলাপাড়ায় এক যুবকসহ মোট তিনজন নিহত হয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে পটুয়াখালী উপকূলীয় জনপদ লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। বিধ্বস্ত হয়েছে ঘর-বাড়ি, বেড়িবাঁধ, রাস্তা-ঘাট, উপড়ে পড়েছে গাছপালা, পুকুর ও ঘের তলিয়ে ভেসে গেছে মাছ। প্লাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দেবনাথ। গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক না হওয়ায় জেলায় ৫ লক্ষাধিক গ্রাহক আন্ধকারে।
নরসিংদী : নরসিংদীর চরাঞ্চল সগরিয়া পাড়ায় ইটের চাপায় স্বামী-স্ত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল ভোরে সদর উপজেলার চরাঞ্চল করিমপুর ইউনিয়নের সগরিয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন সগরিয়াপাড়া গ্রামে ইট ব্যবসায়ী কালো খাঁ (৭০) ও তার স্ত্রী সবমেহের (৬০)।
নোয়াখালী : দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরার পথে পানিতে পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত মো. মান্না (১২) উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামপুর গ্রামের মোক্তার বাড়ির নবীর উদ্দিনের ছেলে।
ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শরিফুল ইসলাম (৪৬) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে সদর উপজেলার পাগলা কানাই ইউনিয়নের চর খাজুরা গ্রামে তার বাড়িতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত শরিফুল ইসলাম ওই গ্রামের মৃত গোলাম নবী লস্করের ছেলে।
লালমনিরহাট : জেলার আদিতমারী উপজেলায় ঝড়ে গাছচাপায় রেজিয়া বেগম (৭২) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিষতুলি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি ওই গ্রামের তাহের উদ্দিন মুন্সির স্ত্রী।
বরগুনা : জেলার সদর উপজেলায় ঘরের ওপর পড়া গাছ সরাতে গিয়ে আবদুর রহমান বয়াতি (৫৬) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের লেমুয়া গ্রামের বাসিন্দা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম মিঞা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল উপকূলে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে।
খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ি আলুটিলায় গাছ সরাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ফায়ার সার্ভিসের এককর্মী মারা গেছে। তার নাম রাসেল হোসেন বয়স ২১। জানা গেছে গতকাল রাতে আলুটিলা এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ে একটি গাছ পড়ে গেলে তা সরাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রাসেল মারা যান। তার বাড়ি ঢাকার ধামরাই এলাকায়।
দিনাজপুর : দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে ঝড়ে ভেঙেপড়া গাছ সরাতে গিয়ে আরেক গাছের খন্ডিত অংশ মাথায় পড়ে মঞ্জুরুল ইসলাম নামে সাবেক এক ইউপি সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে হাকিমপুর-ঘোড়াঘাট আঞ্চলিক সড়কের ঘোড়াঘাটের বিশ্বনাথপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
খুলনা : ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে উপকূলীয় খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে মৎস্য খাতে ৭২১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে জলোচ্ছ্বাসে বাগেরহাটের ২৭ হাজার ৫০০, খুলনায় ৯ হাজার ১৫০ ও সাতক্ষীরার ৩ হাজার ৯০০টি চিংড়ি ঘের ভেসে গেছে। এ ছাড়া আরও ৮ হাজার ১০০টি পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খুলনা বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
খুলনা জেলার কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপে ৩৬টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে লবণপানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আরও ৩৫টি স্থানে বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে ঢুকেছে। ১২ হাজার ৭১৫ হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। এদিকে জোয়ারে লবণপানি থেকে বাঁচতে দাকোপের তিলডাঙ্গা ও পাইকগাছার সোলাদানা পয়েন্টে স্বেচ্ছাশ্রমে বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ করছেন স্থানীয়রা। গতকাল মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে বাঁধ মেরামত কাজে অংশ নিতে বলা হয়।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ে জেলার ৮২ হাজার ২৩৪টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৫২ হাজার মানুষ। খুলন জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান, ৭১টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে ও উপচে প্লাবিত হয়েছে অসংখ্য গ্রাম। এর মধ্যে ৩৬টি পয়েন্টে ১ দশমিক ৭০৫ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে গেছে। আরও ৩৫টি পয়েন্টের ৩ দশমিক ৬৮৮ কিলোমিটার বাঁধ ওভারফ্লো হয়েছে। ঝড়ে ১২ হাজার ৭১৫ দশমিক ৫ হেক্টর জমির ধান, পাট, তরমুজ ও সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে উপকূলীয় খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে ৪০ হাজার ৫১৫টি ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে চিংড়িতে ৩২৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া তিন জেলায় ৮১ হাজার ১০০টি পুকুর বিনষ্ট হওয়ায় ২৪৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এ ছাড়া ঘের ভেঙে যাওয়া, অবকাঠামো ক্ষতিসহ মৎস্য খাতে মোট ৭২১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
রাঙামাটি : টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢলে ডুবেছে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সড়ক। সাজেকে আটকা পড়েছে শতাধিক পর্যটক। গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাঘাইছড়ি উপজেলা কর্মকর্তা শিরীন আক্তার। তিনি বলেন, সাজেকে আছে সব পর্যটক। নিরাপদেই আছে। সড়কের পানি কমে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।
মৌলভীবাজার : কুলাউড়ায় দুই দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গোগালিছড়া নদীর বাঁধ ভেঙে প্রায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে এসব এলাকার শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
সিলেট : সিলেটে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। ভারী বর্ষণের কারণে নগরীর কোনো কোনো স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এ ছাড়া ঝড়ের কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে সঞ্চালন লাইনে গাছপালা পড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দেয়। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরো জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। এদিকে, ভারী বর্ষণের কারণে মহানগরীর মেজরটিলা ও ইসলামপুর এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। অনেকের বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে পানি ওঠার খবর পাওয়া গেছে। টানা বৃষ্টি, বিদ্যুৎহীন অবস্থা ও জলাবদ্ধতান্ড সবমিলিয়ে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হয় ওই এলাকার লোকজনকে।
চট্টগ্রাম : ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে চট্টগ্রামের বেশির ভাগ উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত রবিবার দিবাগত রাত থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়বৃষ্টি ও গাছপালা ভেঙে চট্টগ্রামের প্রায় সব উপজেলা এবং নগরের বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে লাখ লাখ বাসিন্দা।
গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় অস্বাভাবিক জোয়ার ও বৃষ্টিপাতে ৪০০ ঘর প্লাবিত ও সহস্রাধিক মাছের ঘের ভেসে গেছে। উপজেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের মাঝে শুকনা ও রান্না করা খাবার বিতরণ করেছে।
ঝালকাঠি : ঝালকাঠিতে ৬ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ঘরবাড়ি। সোমবার রাতে ঝড়ের সময় জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের বলতলা গ্রামে গাছচাপা পড়ে জাকির হোসেন (৫৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।