জুমবাংলা ডেস্ক : যশোরের শার্শায় গৃহবধূ ধ’র্ষণ মামলার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শুক্রবার মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি হাতে পেয়েই কাজ শুরু করেছে তদন্ত কর্মকর্তা।
মামলায় চার আসামির তিনজন গ্রেফতার হয়েছে। অধরা রয়েছে একজন অজ্ঞাত আসামি।
সেই আসামি কে, সেটি নিয়ে ধ্রুমজাল আছে। ভিকটিম প্রথমে বলেছিলেন, প্রধান অভিযুক্ত এসআই খায়রুলকে চিনতে পারেননি। পরে দাবি করেছেন, ভয়ে এসআই খায়রুলের নাম বলতে পারেননি। ফলে মামলার অজ্ঞাত আসামি সনাক্ত করায় এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য অপরাধী সনাক্তে ডিএনএ টেস্টের উদ্যোগ নিয়েছে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা। এবিষয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পিবিআই যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমকেএইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মামলার ডকেট হাতে পেয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা তদন্ত কাজ শুরু করেছি। অপরাধী সনাক্তে ডিএনএ টেস্টসহ যা যা করণীয় সব কিছুই করা হবে।
জানা যায়, ২ সেপ্টেম্বর শার্শা উপজেলার লহ্মণপুর এলাকায় ওই গৃহবধূর বাড়িতে গভীর রাতে যায় এসআই খায়রুল, সোর্স কামরুলসহ চারজন। তারা ওই গৃহবধূর কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই খায়রুল ও কামরুল তাকে ধ’র্ষণ করেন বলে ওই গৃহবধূ অভিযোগ করেন। ৩ সেপ্টেম্বর ভিকটিম শার্শা থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত একজনের নামে মামলা করেন।
মামলাটি বৃহস্পতিবার পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে পিবিআই যশোর। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে ইন্সপেক্টর শেখ মোনায়েম হোসেনকে। দায়িত্ব পেয়েই ৬ সেপ্টেম্বর তিনি ওই গৃহবধূর বাড়ি পরিদর্শন ও জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা শেখ মোনায়েম হোসেন বলেন, ‘ভিকটিমের সোয়াপ কালেকশন করে ডিএনএ প্রোফাইলের জন্যে সিআইডি হেড কোয়ার্টারে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে ডাক্তারি পরীক্ষায় পাওয়া ধ’র্ষণের আলামতের সঙ্গে গ্রেফতার তিনজনের ডিএনএ টেস্ট করাতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।’
প্রধান অভিযুক্ত এসআই খায়রুল আলম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি তদন্তের বিষয়। তদন্তে কারও যদি সম্পৃক্ততা থাকে, তাহলে পরবর্তীতে আপনাদের জানানো হবে।’
৩ সেপ্টেম্বর সকালে ওই গৃহবধূ যশোর জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে এলে ধ’র্ষণের বিষয়টি জানাজানি হয়। ওই দিন রাতেই শার্শা থানায় মামলা করেন গৃহবধূ। মামলায় এসআই খায়রুলের নাম উল্লেখ ছাড়া আসামি করা হয় কামরুজ্জামান ওরফে কামরুল, লহ্মণপুর এলাকার আব্দুল লতিফ, আব্দুল কাদের ও একজন অজ্ঞাত।
গতকাল শুক্রবার সকালে ওই গৃহবধূ সাংবাদিকদের বলেন, ভয়ে সেদিন রাতে এসআই খায়রুলের নাম বলতে পারেননি।
এদিকে, ধ’র্ষণের ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধী) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন শিকদারকে প্রধান করে তিন সদস্যেরও কমিটি গঠন করেছে জেলা পুলিশ।
যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, তদন্ত কমিটির তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা আছে। সেই হিসেবে রোববার (আজ) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে তদন্ত কমিটি। তদন্তে প্রমাণিত হলে এসআই খায়রুলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৫ সেপ্টেম্বর যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ জানিয়েছিলেন, ডাক্তারি পরীক্ষায় ধ’র্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তবে, সেখানে কার কার সিমেন (বীর্য) রয়েছে তা জানতে ডিএনএ টেস্ট প্রয়োজন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।