জুমবাংলা ডেস্ক: আটকের পর দাবিকৃত টাকা না পেয়ে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত রায়হান আহমদের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ করা হচ্ছে।
তবে এসএমপির ডিসি নর্থ আজবাহার আলী শেখসহ পুলিশের কয়েকজন উর্ধতন কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করছেন বলে জানান সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোর্তিময় সরকার।
তিনি বলেন, পুলিশের কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে রায়হানের মৃত্যু হয় বলে পুলিশ দাবি করছে।
এঘটনায় রবিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করছেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি।
রবিবার ভোরে মৃত্যুর এ ঘটনা ঘটে। নিহত রায়হান আহমদ (৩৪) সিলেট নগরীর আখালিয়া এলাকার নেহারিপাড়ার গুলতেরা মঞ্জিলের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি এক সন্তানের জনক। নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেটস্থ ডা. আবদুল গফফারের চেম্বারে তিনি চাকরি করতেন।
রায়হানের মা সালমা বেগম ও চাচা হাবিবুল্লাহ অভিযোগ করেন, কর্মস্থল চিকিৎসকের চেম্বার থেকে ফিরতে দেরি দেখে শনিবার রাত ১০ টায় রায়হানের মোবাইলে ফোন দেন তার মা ও স্ত্রী। কিন্তু ফোন বন্ধ পান। ভোর চারটা ২৩ মিনিটের দিকে মায়ের মোবাইল ফোনে অপরিচিত একটি নাম্বার থেকে কল দিয়ে রায়হান জানায় পুলিশ তাকে ধরে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নিয়ে এসেছে। এখন তার কাছে ১০ হাজার টাকা ঘুষ চাচ্ছে। টাকা দিলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিবে।
এমন কথা শুনে রায়হানের মা তার চাচাকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পাঠান। রায়হানের চাচা হাবিবুল্লাহ রবিবার খুব ভোরে টাকা নিয়ে ভাতিজা রায়হানকে ছাড়িয়ে আনতে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে যান। এ সময় সাদা পোশাকে ফাঁড়িতে থাকা এক পুলিশ সদস্য বলেন, আপনার ১০ হাজার টাকা নিয়ে আসার কথা। আপনি ৫ হাজার টাকা নিয়ে আসলেন কেন? চলে যান, রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে। আর যে পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ধরে এনেছেন তিনিও ফাঁড়িতে নেই। আপনি ১০ হাজার টাকা নিয়ে সকাল নয়টার দিকে আসেন। তাকে আমরা কোর্টে চালান করবো না। এ কথা শুনে রায়হানের চাচা বাসায় চলে যান এবং পরে সকাল নয়টার দিকে টাকা নিয়ে ফের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে যান।
এ সময় পুলিশ সদস্যরা জানান, অসুস্থ হয়ে পড়ায় সকাল সাতটার দিকে রায়হানকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ খবরে হাবিবুল্লাহ দ্রুত ওসমানী মেডিকেলে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন রায়হানের লাশ মর্গে আছে। ময়নাতদন্তের পর রবিবার বিকেল তিনটার দিকে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে।
পুলিশ নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তার বন্ধু-বান্ধব, আয়-স্বজন ও স্থানীয় লোকজন রবিবার বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের আখালিয়ায় সড়ক অবরোধ করেন। প্রায় আধাঘন্টা সড়ক অবরোধের পর পুলিশ গিয়ে তাদেরকে শান্ত করে সড়ক থেকে তাদের সরিয়ে নেয়। রবিবার ভোরে রায়হানের মৃত্যুর পর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল ছিনতাইকালে কাস্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হানের মৃত্যু হয়। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ উঠলে তদন্তে নামে পুলিশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।