নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর জানাজায় অংশ নিতে তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ‘সশস্ত্র হামলার’ অভিযোগে গ্রেপ্তার যুবলীগ কর্মী মো. সুমন (৪৫)।
সোমবার বিকেলে উপজেলার দড়ি সোনাকান্দা মোড়ে জানাজার নামাজে অংশ নেন তিনি। বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, সুমনকে পুলিশি প্রহরায় জানাজায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়, পরে তাকে আবার নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ সোনাকান্দা এলাকার বাসিন্দা সুমনকে গ্রেপ্তার করে এবং পরদিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। এর মধ্যেই রোববার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হাফেজা বেগম। দুপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চিকিৎসকরা তার মৃত সন্তান প্রসব করান।
সুমনের বড় ভাই ইকবাল হোসেন বলেন, “আমার ভাই বর্তমানে কোনো পদে না থাকলেও যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। এর আগে তিনি ছাত্রলীগের বন্দর উপজেলার সোনাকান্দা ইউনিয়ন শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।”
ইকবাল জানান, ‘বৃহস্পতিবার সুমন গ্রেপ্তার হওয়ার পর নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হাফেজা দুই দিন ধরে থানা ও আদালতে ছুটে বেড়িয়েছেন। চলতি মাসের শেষে সন্তান জন্মের সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু শনিবার সকাল থেকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হলে রবিবার দুপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মৃত সন্তান প্রসব করেন। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।’
জানাজায় উপস্থিত স্থানীয়রা জানান, স্বজনরা সুমনকে তার নবজাতক সন্তানের ছবি দেখালে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। জানাজা শেষে তাকে আবার কারাগারে নেওয়া হয়।
স্থানীয়দের ভাষ্য, সুমন বন্দর উপজেলার যুবলীগ নেতা খান মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন এবং এলাকার ব্রডব্যান্ড সংযোগ ব্যবসার একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। মাসুদ বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ‘সশস্ত্র হামলা ও হত্যার’ অভিযোগে দায়ের করা মামলাগুলোর পলাতক আসামি। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সুমন কিছুদিন আত্মগোপনে থাকলেও পরে এলাকায় ফিরে আসেন বলে জানান স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



