স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: খাদ্য তালিকায় কী অন্তর্ভুক্ত করবেন

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

স্বাস্থ্যকর ডায়েটে ফল, শাকসব্জী, বাদাম, শিম, আস্ত শস্য এবং কম ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাতীয় খাবার এবং কম লবণ, চিনিযুক্ত পানীয়, সাদা ময়দা এবং লাল মাংস রয়েছে। কিন্তু এত এত স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে আপনি কোথা থেকে শুরু করবেন বা কোনটি বেছে নেবেন তা নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। সঠিক নিয়ম মেনে স্বাস্থ্যকর পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার খেতে হবে। অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার বা ফাস্টফুড জাতীয় খাবার প্রতিদিন খেলে শরীরের ওজন বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন রোগ আমাদের শরীরের বাসা বাধতে পারে।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

 

ব্রোকলি

এটি এমন একটি সবজি যাতে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম কিন্তু ব্রোকলি ভিটামিন, মিনারেল আর ফাইবার এ পরিপূর্ণ। প্রত্যেকদিন খাবারে ব্রোকলি রাখলে তা আপনার সুস্বাস্থ্যের কারণ হতে পারে। এর ডাট এবং ফুল সাধারণত সিদ্ধ করে এবং বিভিন্ন ভাবে রান্না করে খাওয়া যায়। অনেকে কাঁচাও খেয়ে থাকেন। ব্রোকলিতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন কে যা হাড়ের ক্ষয়রোধে সহায়তা করে। ফাইবার আমাদের পরিপাকে কল্যাণকর ভূমিকা পালন করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ব্রোকলিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ আছে যা রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে এবং দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে।

প্রাকৃতিক স্যামন মাছ

ওমেগা-থ্রি ফ্যাট সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক (চাষ করা ছাড়া) স্যামন জাতীয় মাছ হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। শরীরকে একশ শতাংশ সক্রিয় রাখতে এ ফ্যাটি অ্যাসিড অত্যন্ত জরুরি। অনেক রোগ প্রতিরোধেও কার্যকরী এটি। হার্টের রোগ, ডিমেনশিয়া, মানসিক অবসাদ কমাতে কাজে আসে এ মাছ। এতে অনেক ভিটামিন, মিনারেল এবং প্রোটিন থাকে। খুব সহজেই স্যামন ভাজি করা যায়, এতে তেমন বেশি কিছু উপকরণেরও প্রয়োজন হয় না৷ হালকাভাবে লেবুর রস, লবন আর গোলমরিচের গুঁড়ো দিয়ে ভাজি করলেও অনেক স্বাদ৷ তবে কেউ চাইলে নিজের ইচ্ছেমতোও করতে পারেন৷

তরমুজ

গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহে একটু স্বস্তি মিলতে এক ফালি তরমুজের জুড়ি নেই। তরমুজে ৯২ শতাংশই পানি, যা শরীরে পানির চাহিদা পূরণ করে। এক কাপ তরমুজের রসে প্রায় ৪৫ ক্যালরি শক্তি পাবেন। এতে চর্বি বা ফ্যাট নেই, চিনির পরিমাণও খুব কম। প্রতিদিন এক কাপ তরমুজের রস খেলেই আপনি ভিটামিন সি ২১ শতাংশ ও ভিটামিন এ এর চাহিদা ২১ শতাংশ পূরণ করতে পারেন। শুধু তাই নয়, এই ফলে আছে বেটা-ক্যারোটিন। এছাড়া লাইকোপিন নামে যে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে তরমুজে, তা উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে, তরমুজ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। তরমুজে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাসিয়াম থাকে। এই উপাদানগুলো হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে।

আপেল

আপেল ভিটামিন সি, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এটি শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এবং যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান তারা নিয়মিত আপেল খেতে পারেন। এছাড়াও আমাদের হজম শক্তি দূর করতে সহায়ক।

কমলালেবু

খুবই পরিচিত একটি শীতকালিন ফল হলো কমলালেবু। আমরা সকলেই জানি এটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধফল। ত্বককে সুন্দর রাখতে কমলালেবুর অবদান রয়েছে। এছাড়াও এতে বিদ্যমান পুষ্টিউপাদান আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমকে মজবুত করে। সুগার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও অবদার অনেক।

অ্যাভোকাডো

এটি অন্যান্য ফল থেকে আলাদা কারণ এতে স্বাস্থ্যকর চর্বি রয়েছে। সালাদ ড্রেসিং হিসেবে অ্যাভোকাডো অনন্য। এটি ক্রিমযুক্ত ও সুস্বাদু। এছাড়াও ভিটামিন সি, পটাসিয়াম ও ফাইবার রয়েছে। পেটের অতিরিক্ত ফ্যাট কমাতে সহায়ক। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকরী।

দই বা ইয়োগার্ট-জাতীয় খাবারকে প্রোবায়োটিক ফুড বলা হয়। এগুলোতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যাকটেরিয়া যা পুষ্টিপদার্থ শোষণে কাজ করে। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে এ ব্যাকটেরিয়া থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। দুধে রয়েছে ফ্যাট, ভিটামিন, ও মিনারেলস। প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ শরীরে প্রচুর শক্তি যোগায়।