জুমবাংলা ডেস্ক : চার বছর বয়সী সিফাত আহমেদের মাথা ইট দিয়ে প্রথমেই থেঁতলে দেওয়া। তারপর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বের করে ফেলা হয় নাড়িভুঁড়ি। পরে সিফাতের রক্তাক্ত লাশ প্রায় ১০ ফুট উঁচু একটি সীমানা প্রাচীর ঘেরা নির্জন জায়গায় রেখে আসে ১২ বছর বয়সী আরেক শিশু।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর অভিযুক্ত ওই শিশুকে গাজীপুর আদালতে হাজির করা হলে এভাবেই সিফাতকে হত্যার লোমর্হষক বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জাবানবন্দী দেয় সে।
পুলিশ জানায়, খেলার কথা বলে সিফাতকে তার মায়ের মোবাইলটি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে বলে ওই শিশুটি। কৌশলে ওই মোবাইল সেটটি হাতে নিয়ে সিফাতকে হত্যার পর তার লাশ লুকিয়ে রাখে নির্জন জায়গায়।
শ্রীপুর থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুজ্জামান খান জানান, কাঁচের বোতল দিয়ে আঘাতের পর শিশুটির মৃত্যু হয়। পরবর্তী সময় মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য কাঁচের বোতল দিয়ে পুনরায় আঘাত করা হয়। এক পর্যায়ে পেট থেকে নাড়িভুঁড়ি বের করে ফেলে সে। ঘাতক শিশুটি আদালতে সে বর্ণনাও দিয়েছে। সিফাতের লাশ উদ্ধারের পরপরই পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদেও ঘাতক শিশুটি এভাবেই হত্যার বর্ণনা দিয়েছিল।
এর আগে সোমবার রাত ১১টার দিকে থানা পুলিশ নিহত সিফাতের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে শ্রীপুর পৌরসভার দারোগারচালা এলাকার ওই প্রাচীর ঘেরা জায়গা থেকে।
পুলিশ জানায়, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার উত্তর ঝুনাগাছ চাপানী গ্রামের আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে সিফাত আহমেদ। শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা বর্ণমালা রোড এলাকায় পরিবার নিয়ে আবু বকর ভাড়া থেকে একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। হত্যায় অভিযুক্ত শিশুর পরিবারও একই বাড়ির ভাড়াটিয়া।
নিহতের স্বজনরা জানান, সোমবার দুপুরে সিফাত একই বাড়ির পাশের কক্ষের ছেলেটির সঙ্গে খেলার জন্য বাইরে যায়। এরপর থেকেই তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এক পর্যায়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। সন্ধ্যায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন সিফাতের বাবা আবু বকর। পরে নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারে মাঠে নামে থানা পুলিশ। সিফাত যে শিশুটির ডাকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় তাকে প্রথমেই পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে স্বীকারও করে হত্যার কথা। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে সীমানা প্রাচীর ঘেরা একটি নির্জন স্থান থেকে সিফাতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শ্রীপুর থানার এস আই অংকুর কুমার ভট্টাচার্য বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর শিশুটিকে গাজীপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রে আদালত হাজির করা হয়। আদালতে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে। গেম খেলার জন্য সিফাতের কাছে মোবাইল সেটটি চেয়েছিল ঘাতক ওই শিশু। কিন্তু সিফাত তা দেয়নি বলে ক্ষোভে তাকে মেরে ফেলে বলে আদালতে স্বীকার করে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে আদালতের বিচারক শামীমা খাতুন ওই শিশুকে টঙ্গীর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।