আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির কাছে নত স্বীকার করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারত থেকে আমেরিকায় ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ওষুধ রপ্তানির ওপর থেকে অবশেষে নিষেধাজ্ঞ তুলে নিলেন মোদি।
করোনা লড়াইয়ে আমেরিকার প্রধান অস্ত্র হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের রপ্তানির উপর থেকে সব বিধিনিষেধ সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে।
কিন্তু ভারত ওষুধ পাঠাবে কিনা তা নিয়ে চরম সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল। ওষুধ রপ্তানিতে ভারতের কাছ থেকে দ্রুত প্রতিক্রিয়া না মেলায় সুর চড়িয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যদি ভারত এই ওষুধ রপ্তানি না করে তাহলে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে দেরি করবে না ওয়াশিংটন।
জবাবে আমেরিকার কাছে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে এই কঠিন সময়ে পাশে থাকার বার্তা দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, ‘মহামারির এই সময়ে মানবিক দিক বিবেচনা করে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, ভারতের ওপর নির্ভরশীল এমন সব প্রতিবেশী দেশ এবং কিছু দেশ যারা এই মহামারিতে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত, সেসব দেশে আমরা প্যারাসিটামল ও হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন সরবরাহ করবো।’
মহামারি করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বের এক আতঙ্কের নাম। কোভিড-১৯ রোগের প্রাদুর্ভাবে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি ও স্পেনসহ পশ্চিমা অনেক দেশ। এখনও পর্যন্ত সে দেশে করোনা আক্রান্তর সংখ্যা তিন লক্ষাধিক। তাই করোনা মোকাবিলায় ব্যবহৃত হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন পেতে মরিয়া আমেরিকা।
হোয়াইট হাউস থেকে প্রায় রোজই প্রেস ব্রিফিং করছেন ট্রাম্প। সোমবার টাস্কফোর্স ব্রিফিংয়ের সময় হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খুব ভাল। আমি এমন কোনও কারণ দেখতে পাচ্ছি না যার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ রপ্তানির উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করবে ভারত। আমি রোববার প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কথা বলেছি। ভারত যদি ওষুধ পাঠায় তবে আমরা এই পদক্ষেপকে সম্মান করব। আর যদি না পাঠায়, তাহলেও ঠিক আছে! কিন্তু হ্যাঁ, আমাদের থেকেও এরপর এমনই ব্যবহার পাবে ভারত।’
কিছুটা সুর চড়িয়ে হুমকির বার্তা দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তারপরই ভারতের এই সিদ্ধান্ত।
এবার মার্কিন মুলুকে পাড়ি দেবে ভারতের হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন। কিন্তু ভারতের যে বেহাল দশা তাতে কি এই সিদ্ধান্ত সঠিক তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
পাশাপাশি, মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যারা পরিকাঠামোগত দিক থেকে নির্ভরশীল সেইসব প্রতিবেশী দেশগুলিকেও সাহায্য করবে ভারত। মোদি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্যারাসিটামল এবং হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনে লাইসেন্স দেবে ভারত সরকার।
শুধু প্রতিবেশী দেশ নয়, জীবনদায়ী এই ওষুধ বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিকে পাঠানো হবে বলেও জানা গিয়েছে। তবে এই তালিকায় এগিয়ে রয়েছে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।