জুমবাংলা ডেস্ক: ঢাকা-কলকাতাসহ বিশ্বজুড়ে অনেক শহরেই যানজট বড় সমস্যা৷ বিশেষজ্ঞরা যানজটের নানা কারণ বিশ্লেষণ করে সমাধানসূত্র তুলে ধরার চেষ্টা করছেন৷ কিন্তু এখনো আমরা তার সুফল দেখতে পাচ্ছি না৷
মানুষের তৈরি রাজপথের চারিদিকে শুধু যানজট৷ অথচ পিঁপড়া হাইওয়ে কখনোই থমকে যায় না৷ সেখানে অনেক ভিড় থাকলেও কখনো কোনো যানজট হয় না৷ আমাদের হাইওয়েতে যানজট শুধু স্বাভাবিক হয়ে উঠছে না, মানুষ একের পর এক যানজটের রেকর্ডও ভেঙে চলেছে৷
২০০৫ সালে রিটা নামের ঘুর্ণিঝড় থেকে বাঁচতে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ অ্যামেরিকার হিউস্টন শহর থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন৷ ফলে গোটা পরিবহণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে৷ প্রায় ৪৮ ঘণ্টা ধরে ১৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছিল৷
২০১৪ সালে ব্রাজিলে বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালের সময়ও এমন সংকট ঘটেছিল৷ সাও পাওলো শহর থেকে শুরু হয়ে যানজট ৩৪৪ কিলোমিটার দীর্ঘ হয়ে উঠেছিল, যা প্রায় রিও ডি জেনেইরো পর্যন্ত দূরত্বের সমান৷
২০১২ সালে মস্কো শহর প্রচণ্ড শীতের কবলে পড়েছিল৷ প্রবল তুষারপাতের কারণে মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের মধ্যে হাইওয়ে টানা তিন দিন, তিন রাত বন্ধ ছিল৷
কিন্তু যানজটের প্রধান কারণগুলি কী কী? পরিবহণ বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রো. পেটার ভাগনার মনে করেন, ‘‘মূল কারণ অবশ্যই ধারণক্ষমতার অভাব৷ অন্য কারণও রয়েছে বটে, তবে সেগুলি তেমন ঘনঘন দেখা যায় না৷ কখনো কিছু মানুষ গাড়ি চালানোর সময় ভুল করে৷ অসতর্ক থাকার কারণে জোরে ব্রেক কষতে হয়৷”
যানজট বিশেষজ্ঞ মিশায়েল শ্রেকেনব্যার্গ এমন প্রবণতা আরও বিশ্লেষণ করে বলেন, ‘‘পথে মেরামতির কাজ, দুর্ঘটনা, খারাপ আবহাওয়া যানজটের কারণ হতে পারে৷ তবে ষাট থেকে সত্তর শতাংশের জন্য পথে ওভারলোড বা মাত্রাতিরিক্ত সংখ্যার গাড়িঘোড়া দায়ী৷ অঞ্চল অনুযায়ী কিছু হেরফের হয়৷ একই সময়, একই রুটে, একই দিকে খুব বেশি যানবাহন চললে বিশ্বের প্রায় যে কোনো প্রান্তেই যানজট প্রায় অনিবার্য৷”
পিঁপড়া কীভাবে ভিড় সামলায়? বার্লিনের ‘অ্যান্টস্টোর’ দোকানের মালিক মার্টিন সেবাস্টা বলেন, ‘‘পিঁপড়াদের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সংহতির বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ৷ গাড়িচালকদের ক্ষেত্রে হয়তো সেটা খুব বেশি দেখা যায় না৷ সবাই দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে ব্যস্ত থাকেন৷ অন্যদের অবস্থা বিবেচনা না করে সবাই শুধু নিজের স্বার্থ দেখেন৷ এমন আগ্রাসী গাড়িচালকরা কিছুটা সংযত হলে ভালো হয়৷”
মানুষের আচরণ বিশ্লেষণ করে যানজট বিশেষজ্ঞ মিশায়েল শ্রেকেনব্যার্গ বলেন, ‘‘পথে ড্রাইভাররা সহযোগিতা করতে চান না৷ তাদের স্বার্থপরতার কারণে গোটা প্রণালী কার্যকর হতে পারে না৷ গণিতের ভাষায় একে ম্যাক্সিমা বলা হয়৷ অর্থাৎ ইউজার অপ্টিমাম এবং সিস্টেম অপ্টিমামের মাঝে চালককে নিজের জন্য সেরা পরিস্থিতি বেছে নিতে হয়৷ ব্যবহারকারী হিসেবে তার সুবিধা হলেও পরিবহণ ব্যবস্থার জন্য সেটা মোটেই সেরা পথ নয়৷ চালকেরা পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়ে গেলে সিস্টেম মোটেই কার্ষকর হতে পারে না৷”
অন্যদিকে পিঁপড়া সহযোগিতায় বিশ্বাস করে এবং একই লক্ষ্যের জন্য কাজ করে৷ মানুষও আসলে গন্তব্যে পৌঁছতে চায়৷ কিন্তু শুধু নিজের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবার কারণে অনেকটা সময় যানজটেই কেটে যায়৷ তথ্যসূত্র: ডয়চে ভেলে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।