শুভব্রত দত্ত, বাসস: বরিশাল জেলার ৩ হাজার ৯’শ ৬১ টি ভূমিহীন পরিবারের জীবন পাল্টে দিয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্প। নিস্ব ও অসহায় সেই সব মানুষগুলো এখন স্বপ্ন দেখছে সুন্দরভাবে বাঁচার।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ২০২০-২১ অর্থ বছরে প্রকল্প ২-এর আওতায় ‘আশ্রয়ণের অধিকার-শেখ হাসিনার উপহার’ হিসেবে গৃহ প্রদান করা হয়। জেলার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর মাঝে বিতরণের জন্য ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদান পূর্বক একক গৃহ নির্মাণ করা হয়। সেই মোতাবেক ৩টি ধাপে জেলার ১০ উপজেলায় সর্বমোট প্রায় ৩৯৬১টি পরিবারের মাঝে দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমি পাকা গৃহ বিতরণ করা হয়। যথাক্রমে ১ম পর্যায়ে ঘর বিতরণ করা হয় ১৫৫৬টি, ২য় পর্যায়ে বিতরণ করা হয় ৫৪৯টি ও ৩য় পর্যায়ে বিতরণ করা হয় ১৮৫৬টি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এক টুকরো জমি তো দূরে থাক, তাদের মাথা গোঁজার জায়গা ছিল না। বর্তমানে মানুষগুলো সুন্দর ও মানুষের মতো বেচেঁ থাকার স্বপ্ন দেখছে। বর্তমান সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে তারা এখন পেয়েছে একটি নিজস্ব ঘর। একটু আশা। তাই তো পাল্টে গেছে তাদের জীবনমান।
সরোজমিনে দেখাগেছে, জেলারর সদর উপজেলায় ১’শ ৫৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর প্রদান করেছে সরকার। পাকা মেঝে ও দেয়াল ঘেরা টিনশেড একটি লম্বা ঘরে খুব ভাল ভাবেই বাস করতে পারে ছোট একটি পরিবার। প্রতি ১০ টি পরিবারের জন্য একটি টিউবয়েল, পাচঁটি পরিবারের জন্য একটি স্যানিটারী ল্যাপটিন এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও রয়েছে এ প্রকল্পে।
এবিষয়ে সুমা, শেফালী ও পারভিন বেগম বলেন, কিছু দিন পূর্বেও আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। আমরা ছিলাম এক প্রকার যাযাবরের মতো। এখন বর্তমান সরকারের সহায়তায় আমাদের নিজেদের একটি ঠিকানা হয়েছে। স্বামী, সন্তানদের নিয়ে খুব ভাল ভাবেই সংসার চলছে। এজন্য সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
এ বিষয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ভ্যান চালক খলিল হাওলাদার বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রতিটি পদক্ষেপ খুবই সুন্দর ও ভালো। কিন্তু আরও একটু ভালোাবে বাঁচার জন্য প্রয়োজন কাজের সুযোগ। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রত্যেক পরিবারের জন্য চাষাবাদের জমি বরাদ্ধ দেয়ার আবেদন জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক ও নাট্য ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ দুলাল বলেন, জেলার ১০ উপজেলার ভূমিহীন, অতি দরিদ্র ও খেটে খাওয়া আশ্রয়হীন জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়াতেই সরকার এ আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ করেছে।
তিনি বলেন, কিছুটা হলেও আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো বর্তমানে মেরামত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের দীর্ঘায়ু ও সাফল্য কামনা করেন।
এব্যপারে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ২০২০-২১ অর্থ বছরে জেলার ১০ উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্প-এর আওতায় সর্বমোট প্রায় ৩৯৬১টি পরিবারের মাঝে ঘর প্রদান করা হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের সরকার শুধু থাকার সুযোগই সৃষ্টি করেনি, তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ, স্বাস্থ্যসেবা, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা এবং তাদের সন্তাদের শিক্ষার ব্যবস্থাও করেছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দশটি বিশেষ উদ্যোগের একটি হচ্ছে আশ্রয়ণ প্রকল্প। মূলত ভূমিহীন ও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর সাহায্যার্থে এ আশ্রয়ণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। বর্তমান সরকার ১৯৯৭ সালে প্রথম এ প্রকল্প হাতে নেয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।