জুমবাংলা ডেস্ক : খালি বাসার বাথরুম থেকে আটক অবস্থায় ১২ বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শিশুটি তিন দিন আটক ছিল ওই বাথরুমে। তার শরীরেরে বিভিন্ন স্থানে ছিল ক্ষত। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ঘটে এ ঘটনা।
শনিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে বসুন্ধরার বি ব্লকের, ৪ নম্বর রোডের ১৯৩ নম্বর বাসা থেকে ওই গৃহকর্মী শিশুটিকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান ভাটারা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) হাসান মাসুদ।
এ ঘটনায় শিশুটিকে নির্যাতন করার অভিযোগে গৃহকর্তা এজাস সাকলাইন ও তার স্ত্রী তানজিমা হাসেমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা তিন দিন আগে বাসাটি তালা দিয়ে অন্য জায়গায় ছিলেন বলে জানান তিনি।
এসআই আরও জানান, ওই বাসার দরজায় বাইরে থেকে তালা দেয়া ছিল। দারোয়ানের কাছ থেকে চাবি নিয়ে তালা খুলে শিশুটিকে বাথরুমের ভেতর আটকানো অবস্থায় পাওয়া যায়। শিশুটির সমস্ত শরীরে নতুন-পুরাতন ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। উদ্ধারের পর তাকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেয়া হয়।
আটক থাকা অবস্থায় শিশুটি তিন দিন বাথরুমের পানি খেয়ে বেঁচে ছিল। অনেক কান্নাকাটি করেও কারও সাড়া পায়নি।
চিকিৎসার পাশাপাশি যাতে সব ধরনের আইনি সহায়তা পায় সেজন্য শিশুটিকে ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টারে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান এসআই মাসুদ।
পুলিশ জানায়, শিশুটির বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। এক ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। তার বাবা রতন তাদের রেখে চলে গেছেন। মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়েছে। ময়মনসিংহের রহমতপুরে নানি হালিমার কাছে থেকে বড় হচ্ছিল শিশুটি। দুই মাস আগে কমলা নামে এক নারী তাকে ঢাকার বাসায় সাড়ে তিন হাজার টাকা বেতনে কাজে দিয়ে যায়।
ভাটারা থানার ওসি সাজেদুর রহমান জানান, শিশুটির চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ সেই বাসায় গিয়ে দরজা খুলে তাকে উদ্ধার করে। ঘটনার পরপরই ওই দম্পতিকে আটক করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল জানান, শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দেয়া হয়েছে, তাকে মারধরও করা হয়েছে। অনেকগুলো ছ্যাঁকার চিহ্ন শুকিয়ে এসেছে। বাকিগুলোতে ড্রেসিং করে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেলের ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টারে পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
পুলিশ আরও জানায়, তুচ্ছ সব কারণে তাকে নির্যাতন করা হতো। ঘুম থেকে দেরি করে উঠলে, কাজ না পারলে। এমনকি পাশের বাসার বিড়াল শব্দ করলেও গৃহকর্ত্রীর ছেলের অভিযোগে তাকে মারধর করা হতো। রান্না করার গরম খুন্তি দিয়ে তার মাথা থেকে পা পর্যন্ত ছ্যাঁকা দেয়া হতো। এছাড়া রড দিয়েও পেটানো হয়েছে শিশুকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।