মোঃ সজল আলী, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিল্লাল হোসেনের আচরণ ও দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন হরিরামপুরবাসী। তার কাছে সেবা নিতে এসে অপমানিত হয়নি এমন মানুষের দেখা পাওয়া নাকি দুষ্কর। এসিল্যান্ডের কাছে কোনো কাজ নিয়ে আসলেই তার তোপের মুখে পড়তে হয়। তিনি মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে স্থানীয় গণ্যমান্য লোকসহ সাধারণ মানুষকে মানুষই মনে করেননা বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
অনেকে তার ভয়ে মুখ খুলতে চান না। তবে ভুক্তভোগী কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে তার খারাপ আচরণের কথা স্বীকার করেন অকপটেই। ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলতে গেলে কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, এসিল্যান্ড বিল্লাল হোসেনের এমন ব্যবহারে আমরা এখন অতিষ্ঠ। তার খারাপ আচরণের কথা হরিরামপুরের সব শ্রেণীপেশার মানুষেরই জানা।
বীরমুক্তিযোদ্ধা সবুর বিশ^াস বলেন, তিনিতো মানুষকে মানুষই মনে করেন না। আমরা একটা বিষয় নিয়ে তার কাছে গেলে তিনি খুব খারাপ ভাষায় উল্টো পাল্টা ও অশালীন কথা বলে বলেছিল। শুধু আমার সাথে নয়, হরিরামপুরের আরো কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সাথে তিনি খারাপ ব্যবহার করেছে। সে তার অফিসের স্টাফদের সাথে যে কি ব্যবহার করে সেটা বলার না।
ঝিটকা বাজার কমিটির সভাপতি বেলায়েত হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ঈদুল আযহার আগে একদিন মোবাইল কোর্ট নিয়ে আমাদের ঝিটকা বাজারে আমার অফিসে আসেন। তখন তার সাথে আমার সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়। একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আপনি বেশি কথা বললে আপনাকে হান্দাইয়া দিমু’। পরে এই এই ঘটনার বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ফোন করে জানিয়েছিলাম। পরে তিনি বলেছিলেন ঠিক আছে আমি বিষয়টা দেখবো।
আন্ধারমানিক গ্রামের মৃত রহমত আলীর ছেলে হাসমত আলী(৬৩) বলেন, আমরা একটি জমির খারিজের জন্য হরিরামপুর উপজেলার এসিল্যান্ড বিল্লাল হোসেনের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি আমার কাগজ না দেখেই ছুঁড়ে মেরে বলেন জান আপনাদের এই খারিজ হবেনা বদমাইশের দল।
চালা ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে মোঃ মনির বলেন, আমি এসিল্যান্ডের কাছে একটা কাজ নিয়ে গেছিলাম, তার রুমে ঢোকার সাথে সাথেই সে আমাকে বলছে ‘আপনাকে কিন্ত বসতে বলি নাই’। সে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, আমার কাজ সে না করতেই পারে। সে তো আমার সাথে এমন ব্যবহার করতে পারে না। ডিসি স্যারের কাছে কোন কাজ নিয়ে গেলে ডিসি স্যার অন্তত আমাদের কথা শোনে। কাজ না করতে পারলে বিষয়টা বুঝিয়ে বলেন। কিন্ত এসিল্যান্ডের কাছে কাজ নিয়ে গেলেই খারাপ ব্যবহার করে। সে তো একজন প্রথম শ্রেণীর বেয়াদব।
এ প্রসঙ্গে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিল্লাল হোসেন বলেন, এটা একটা ভিত্তিহীন অভিযোগ।আমার কাছে বৈধ কাজ নিয়ে এসে কেউ হয়রানি বা খারাপ ব্যবহরের স্বীকার হয়েছে এরকম কোন প্রমাণ থাকলে আমার কাছে নিয়ে আসতে পারেন। কেউ বেআইনী কাজ নিয়ে আসলে তার সাথে কি ভালো ব্যবহার করার দরকার আছে?
এ প্রসঙ্গে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ না পেলে আমি কোন কথা বলতে পারবো না। যদি কোন লিখিত অভিযোগ করে তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বলেন, বিনা কারণে কারো সাথে দুর্ব্যবহার করার বিষয়টি প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।