নিজেস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: কাজল ও ফাতেমা দম্পতির বড় সন্তান নুরা। মা-বাবার একটু বিশেষ নজরই ছিল তার ওপর। যে কাউকে মুগ্ধ করে দেয়ার মতো আচরণ ছিল তার। যদিও প্রয়োজন না হলে কারও সঙ্গে কথা বলতো না সে। বিদ্যালয় সময়ের বাইরে সারাক্ষণ লেখাপড়ায় মনোযোগ ছিল তার। শিক্ষা জীবনের প্রতিটি পদে পদে সে সফলতার সাক্ষর রেখেছিল।
স্থানীয় এইচএকে একাডেমির একজন শিক্ষার্থী হিসেবে চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল নুরা। কিন্তু ফলাফল প্রকাশের আগেই দুর্বৃত্ততের হাতে মা, ছোট বোন ও ছোট ভাইয়ের সাথে নারকীয় বর্বরতার শিকার হয়ে প্রাণ হারাতে হলো তাকে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার আবদার গ্রামে একই পরিবারের চারজনের মরদেহের মধ্যে একজন এই মেধাবী নুরা।
এইচএকে একাডেমির পরিচালক শাহীন সুলতানা জানান, নুরা প্রতিটি পরীক্ষায় সফলতার সাক্ষর রেখেছিল। জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিও পেয়েছিল। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সে অংশ নিয়েছিল। এখানেও ফলাফলে তার ভালো করার কথা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, নুরা শিক্ষকদের বলেছিল সে ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে দেশের মানুষের সেবা করতে চায়। এ স্বপ্নের কথা সে তার বাবা ও মাকেও বলেছিল। তার মা প্রায় সময়েই বিদ্যালয়ে এসে তার সন্তানের লেখাপড়ার খোঁজ নিতেন। এসময়ে নুরা যেন চিকিৎসক হতে পারে সেজন্য তার প্রতি বিশেষ নজর দিতে অনুরোধ রাখতেন শিক্ষকদের প্রতি। অসম্ভব একজন ভদ্র মেয়ে ছিল নুরা, তার মার্জিত আচরণে সবার বিশেষ নজরেই থাকতো সে। অকালেই নুরার মতো এতটি মুকুল এভাবে ঝরে যাবে এ ঘটনা যেন কারও বিশ্বাসই হচ্ছে না। যারা এই মেধাবী নুরার স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে তাদের কঠোর শাস্তির দাবি তার।
নুরার দাদা আবুল হোসেন জানান, তার ছেলে প্রবাসে থাকার পরও তিনি মাঝে মধ্যে তার পুত্রবধূ ও নাতনিদের খোঁজখবর নিতে আসতেন। তার পুত্রবধূ অসম্ভব ধার্মিক নারী ছিলেন। তার নাতনিরাও মেধাবী ছিল। বিশেষ কোনো প্রয়োজন না হলে তারা কেউ বাসা থেকে বের হতো না। তার ছেলে কাজলের স্বপ্ন ছিল তার সন্তানদের মানুষ করেই তবে প্রবাস থেকে ফিরবেন। এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে একদিকে সন্তানদের স্বপ্নের সাথে সাথে তার ছেলের স্বপ্নও নিভে গেল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।