নিজেস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম নগরবাসীকে সরকারি ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মেনে সীমিত পরিসরে মসজিদে নামাজ পড়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার তিনি নগরীর মসজিদগুলো মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বুধবার বিকেলে মেয়র জাহাঙ্গীর নগরীর বোর্ড বাজারে সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়ে এক ভিডিও বার্তায় এ আহ্বান জানান।
ভিডিও বার্তায় মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের পক্ষ থেকে এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নীতি মেনে যে লকডাউন দিয়েছে তা শতভাগ মেনে চলছি। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে মসজিদে সীমিত আকারে লোক নিয়ে নামাজ আদায় করার জন্য। আমরা যেন তা শতভাগ মেনে চলি।
তিনি বলেন, গাজীপুরে কোন জায়গায় কি অবস্থায় করোনাভাইরাসের পজিটিভ আছে এখনও আমরা এটা শতভাগ নিশ্চিত নই। সেই হিসেবে আমরা প্রত্যেক এলাকায় যাচাই-বাছাই ও খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি এখানে ভাসমান অনেক লোক আছে এবং বিভিন্ন গার্মেন্টসের শ্রমিকরা বাইরে থেকে এসে এখানে কাজ করছে। আমরা সুনিশ্চিত হতে পারছি না আমাদের মহল্লা ভিত্তিক, ওয়ার্ড ও থানা ভিত্তিক কোথায় এ ভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা কত।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী, সরকার, ধর্ম মন্ত্রণালয় ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে যেভাবে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে আমরা যেন সেভাবে মসজিদ ভিত্তিক ও অন্যন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সেটা মেনে চলি। প্রয়োজনে আপাতত আমরা ঘরেই নামাজ আদায় করি। করোনাভাইরাস নিয়ে আমরা আতঙ্কিত আছি। আমাদের সন্তানরা, আমাদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন আমাদের নগরের প্রত্যেক নাগরিকদের জীবনের কথা চিন্তা করে আমি সবাইকে অনুরোধ করবো যেটা আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এবং ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেটা যেন আমরা শতভাগ মেনে চলি।
তিনি বলেন, মহানগরীর প্রত্যেক নাগরিককে অনুরোধ করবো ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেটা অনুসরণ করে মসজিদে আপনারা সীমিত আকারে মুসল্লি নিয়ে নামাজ আদায় করবেন। সরকার যে সময়ে যে দিক নির্দেশনা দেবেন এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে দিক নির্দেশনা দেবে সেটা আমরা মেনে চলবো। আমরা আল্লাহর কাছে এই দোয়া করি আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে মাফ করে দেন। করোনাভাইরাস থেকে আমরা যেন মুক্ত হতে পারি সবাই যেন সবাইকে সহযোগিতা করি।
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশের মসজিদসমূহে নামাজ আদায়ের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। গত ৬ এপ্রিল ধর্ম মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মসজিদে কোনো জামাতে পাঁচজনের বেশি মুসল্লি অংশ নিতে পারবে না। জুমার নামাজে অংশ নিতে পারবে দশজন। এ সময় মুসল্লিদের নিজ নিজ বাসায় নামাজ আদায় করতে বলা হয়। অপর দিকে গত ২৪ এপ্রিল ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এক নির্দেশনায় বলা হয় রমজানে এশার জামাতে মসজিদের ইমাম, মেয়াজ্জিন, খতিব, খাদেম এবং দুইজন হাফেজসহ ১২ জন মুসল্লি তারাবির নামাজ আদায় করতে পারবে। অন্যদের নিজ নিজ বাড়িতে তারাবির নামাজ আদায় করা জন্য বলা হয়।
মঙ্গলবার গাজীপুর সিটি মেয়র মহানগরীতে শুক্রবার থেকে সকল মসজিদ খুলে দেয়ার ঘোষণা দিলে নগরীর বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ও মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং আলেম ওলামাগণ দ্বিধাদ্বন্ধে পড়ে যান। তারা সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মানবেন, নাকি গাজীপুরের সিটি মেয়র যে নির্দেশ দিয়েছে সেটা মানবেন। এ অবস্থায় বুধবার মেয়র আরেক ভিডিও বার্তায় তার আগের বক্তব্য থেকে সরে এসে সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয় যে নির্দেশনা দিয়েছে তা মেনে চলার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।