জুমবাংলা ডেস্ক : ৪ মাস বিরতি দিয়ে আবারো ফর্মে ফিরেছে আশিকুর রহমান সাগর ওরফে স্টেপ সাগর। স্টেপ করাই এই কিশোরের নেশা। ১৬ বছরে অন্তত ৮ ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করে স্টেপ সাগর হিসেবে খ্যাতি লাভ করে!
তার বিরুদ্ধে করা একটি অভিযোগ প্রত্যাহার না করার কারণে বৃহস্পতিবারও মধ্যবয়সী এক ব্যক্তিকে ক্ষতবিক্ষত করেছে স্টেপ সাগর। এদিন সন্ধ্যায় শহরের ভানুগাছ রোডের রেল ক্রসিং এলাকায় একটি চায়ের দোকানে চা পানের সময় আনোয়ার হোসেন মুকিদ (৪৬) নামে এক ব্যক্তিকে এলোপাথারি ছুরিকাঘাত করে সঙ্গীদের নিয়ে পালিয়ে যায় সাগর।
আনোয়ার হোসেন মুকিত শহরের জেটি রোডের বাসিন্দা আবদুল মতিনের ছেলে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় আহতের স্ত্রী দিলারা বেগম বাদী হয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
দিলারা বেগম মামলায় অভিযোগ করেন, সম্প্রতি একটি তুচ্ছ ঘটনায় তার ছেলে ফয়সল আহমেদ শুভকে সাগর ও তার সহযোগী আকাশ মিয়া (২১) মারপিট করে। এ ঘটনায় সাগর ও আকাশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়। তারা এই মামলা তুলে নিতে গত কিছুদিন ধরে দিলারা বেগম ও তার পরিবারের সদস্যদের চাপ ও হুমকি দিয়ে আসছিল। কিন্তু দিলারা বেগমের পরিবার মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানায়।
এরই জের ধরে সাগর ও আকাশ কয়েকজন সহযোগী নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই হোটেল চা পানের সময় দিলারা বেগমের স্বামী আনোয়ার হোসেন মুকিতের ওপর ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পরে মারাত্বক আহত অবস্থায় মুকিতকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
এর আগে গত ২৭ জুন শহরের কলেজ সড়কের তৃষান হেয়ার ফ্যাশন সেলুনের সামনে নটরডেম কলেজের একাদশ শ্রেণির মেধাবী ছাত্র ও শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মহসিন মিয়া মধুর ভাতিজা ইমানী হোসেন অন্তরকে কুপিয়ে আলোচনায় আসে সাগর। অন্তর স্টেপের ঘটনা শহরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
এরপর ৮ জুলাই হবিগঞ্জ জেলার মাধপুর থানা থেকে সাগর ও তার সহযোগীকে আটক করে পুলিশ। এদিন রাত ৯টার দিকে সাগর ও তার এক সহযোগী দ্বীপের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্যদের নিয়ে একটি অভিযান পরিচালনা করে শহরের গুহ রোডস্থ বনশ্রী নার্সারিতে। সেখান থেকে দেশীয় অস্ত্র ৩টি ধারালো দা ও ৩টি চাকু উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, তৃষান হেয়ার ফ্যাশন সেলুন ও রেবতী টি স্টলের সামনে বখাটে ছেলেরা সকাল-সন্ধ্যা আড্ডা জমায় ও স্কুল-কলেজে ছুটি হলে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে আসা-যাওয়ার পথে ছাত্রীদের উত্যক্ত করে। এ নিয়ে ভয়ে কেউ মুখ খোলেন না।
তারা জানান, উঠতি বয়সের সন্ত্রাসী হিসেবে কিশোর সাগর একাধিক ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটিয়েছে। সেই থেকে আশিকুর রহমান সাগর স্টেপ সাগরে পরিচিত লাভ করে।
স্টেপ সাগরের পরিচিতি সাগরকে দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠতে সাহায্য করে বলে কলেজ রোড়ের অনেক বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন।
এর আগে ২০১৭ সালে ১১ নভেম্বর রেবতী স্টলের সামনে সন্ধ্যায় কলেজ সড়কের বাসিন্দা সৈয়দ মুর্শেদ সালেহীন নাবিল (২৬) রিকশাযোগে বাসায় ফেরার পথে সাগর তার গতিরোধ করে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। নাবিল এখনো পঙ্গুত্ব জীবনযাপন করছেন।
এ ঘটনার কিছুদিন পর পৌর কমিশনার আলকাছ মিয়ার ছেলে বদরুজ্জমান নাইমকে কোর্ট সড়কে আটকিয়ে সাগর একই কায়দায় মারধর করে। একপর্যায়ে তার হাতে থাকা দা দিয়ে কোপ দিলে ওই কোপ মাটিতে পড়ে প্রাণে রক্ষা পায় নাইম।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আবদুছ ছালেক জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে আমরা তদন্ত করছি। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সূত্র : যুগান্তর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।