স্পোর্টস ডেস্ক : ছেলেদের টি-টেন লিগ। সেটাও আবার জার্মানিতে। সেই লিগেই এক টিমের উইকেটকিপার কি না এক ভারতীয় মেয়ে! সদ্য পঁচিশে পা দেওয়া বেঙ্গালুরুর শারণ্যা সদারঙ্গানি এ ভাবেই ইতিহাস তৈরি করলেন জার্মান ক্রিকেটে।
শারণ্যা নয়, জার্মানির ক্রিকেট মাঠে শারু নামেই তাকে চেনেন সবাই। উত্তর জার্মানির কুমারফেল্ড শহর থেকে শারু বলছিলেন, ‘আমি কুমারফেল্ডার স্পোর্টসভেরেন (কেএসভি) ক্লাবের কাছে কৃতজ্ঞ তারা আমাকে এই টি-টেন লিগে খেলার সুযোগ দিয়েছে।’ শুধু তাই নয়, এই লিগে তার টিমই চ্যাম্পিয়ন। ছ’ম্যাচে উইকেটের পিছনে আট শিকার শারণ্যার। টুর্নামেন্টে যা সবচেয়ে বেশি। এখানেই শেষ নয়, ডাক পেয়েছেন জার্মান ক্রিকেট সংস্থা থেকে।
কর্নাটকের অনূর্ধ্ব-১৬, অনূর্ধ্ব ১৯ পর্যায়ে খেলেছিলেন শারণ্যা। ক্রিকেট শেখা শুরু করেন ‘কর্নাটক ইন্সটিটিউট অফ ক্রিকেটে’। তার কথায়, ‘সেখানে ইরফান সেইত, মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন আর মাসুদ স্যার আমাকে ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন।’ আর প্রিয় ছাত্রীকে নিয়ে কোচ ইরফান বলেছেন, ‘শারণ্যা আর ওর এক কাজিন আসত ক্রিকেট শিখতে। দুজনেরই ভালো প্রতিভা ছিল। শারণ্যার বাবা ছিলেন মোটিভেশনাল স্পিকার। শারণ্যার মাঝেও সেই গুণ আছে। সে সবসময় সতীর্থদের উৎসাহ দিতে পারত।’
ভারত থেকে জার্মানি যাওয়ার গল্প নিয়ে শারণ্যা বলেন, ‘৭ বছর আগে পড়াশোনার জন্য ইংল্যান্ডে যাই। এসেক্স কাউন্টির হয়ে কিছু ম্যাচ খেলেছিলাম। পরে পড়াশোনার জন্য উত্তর জার্মানিতে যাই। ইংল্যান্ডে থাকা অবস্থায় জার্মান ক্রিকেট সংস্থার মোনিকা লাভডের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল। ফলে জার্মানিতে যাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই আমি ক্লাব পেয়ে যাই। আবারও ক্রিকেট খেলার সুযোগ পেয়ে খুব ভালো লেগেছিল।’
ইংল্যান্ড ছাড়া ইউরোপের বেশিরভাগ ক্রিকেট দল আসলে এশিয়ান বংশোদ্ভুত ক্রিকেটারদের নিয়ে তৈরি। শারণ্যার কেএসভি ক্লাবও তাই। কিছু মানুষ ফুটবলের দেশ জার্মানিতে ক্রিকেট জনপ্রিয় করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। যাদের বেশিরভাগই এশিয়ান। শারণ্যা বলেছেন, ‘আমাদের কেএসভি ক্লাবেই বেশিরভাগ ক্রিকেটার ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের। তবে আমাদের যুব দলে স্থানীয় জার্মান খেলোয়াড়ও আছে।’
শারণ্যর আইডল সাবেক অজি তারকা অ্যাডাম গিলক্রিস্ট এবং ইংল্যান্ডের নারী ক্রিকেট তারকা সারা টেইলর। ঘটনাচক্রে দুজনের সঙ্গেই তার দেখা হয়েছিল। শারণ্য বলেন, ‘একবার আইপিএলের সময় বেঙ্গালুরুতে গিলক্রিস্টের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। আর এসেক্সে খেলার সময় প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছি সাসেক্সের সারাকে। সারার কিপিং দেখে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। জার্মানির জাতীয় দলে ডাক পেয়েছি। আশা করি জার্মানি ও সেই সঙ্গে ইউরোপে মেয়েদের ক্রিকেটের উন্নতিতে কিছু অবদান রাখতে পারব।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।