জুমবাংলা ডেস্ক : চাকরির ভিসায় বিদেশ পাঠানোর নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে শ্রীলঙ্কার জঙ্গলে ফেলে দিত মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা। সব খুঁইয়ে কেউ দেশে ফিরতে পারলেও অনেকের কোনো খোঁজ পায়নি আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সম্প্রতি এ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভোগ (সিআইডি)। বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সিআইডি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, চাকরি ভিসায় ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর কথা বলে লোকজনের সাথে যোগাযোগ করে পাচারকারী চক্রের সদস্যরা। পরে ভয়াবহ নির্যাতনের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ২৮টি পাসপোর্ট, বিভিন্ন দূতাবাস, ব্যাংক ও এজেন্সির ১৯টি সিলমোহর ও কম্বোডিয়ার ১০টি জাল ভিসা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. হাবিবুর রহমান, মামুনুর রশিদ (মামুন), মো. জামাল হোসেন ও নাহিদুল ইসলাম পলাশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানার হাতুড়াবাড়ি গ্রামের ভূক্তভোগী আহসান হাবীব জানান, মাল্টা পাঠানোর কথা বলে ১২ লাখ টাকার চুক্তি হয়। দেশে থাকতেই ৮ লাখ টাকা নেয়। পরে ভারতের হায়দরাবাদে নিয়ে নির্যাতন করে আরও চার লাখ টাকা আদায় করে। এরপর জঙ্গলে ফেলে দেয়। পরে তিনি স্থানীয় লোকদের সহযোগিতায় দেশে ফিরে আসেন।
অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, মাল্টা, চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি, মিশর, মালদ্বীপ কিংবা কম্বোডিয়া পাঠানোর কথা বলে মানুষ সংগ্রহ করত এ চক্রের সদস্যরা। পরে অনুমোদনহীন এজেন্সির মাধ্যমে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অনুমোদন ছাড়াই প্রথমে ভিজিট ভিসায় ল্যান্ড চেকপোস্ট ভারতে পাঠাত। এখান থেকেই শুরু হতো নির্যাতনের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়া। যারা টাকা দিতে পারেন না তাদের বিভিন্ন জায়গায় আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হতো। পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে টাকা আদায় শেষে জঙ্গলে ছেড়ে দিত।
সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, চক্রটি ৬-৭ বছর ধরে এ কাজ করছে। তারা প্রায় একশোর মতো লোক পাচার করেছে। আমরা এখনও পর্যন্ত সেসব ভূক্তভোগীদের সন্ধান পাইনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রথমে তাদের বিআরটিসি বাসে করে বেনাপোল নেয়া হয়। পরে কলকাতা হয়ে হায়দারাবাদে নেয়া হয়। এরপর টলারে করে নেয়া হয় শ্রীলঙ্কায়। সেখানে নির্যাতন করে পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে টাকা আদায় করে জঙ্গলে ফেলে দেয়া হতো। কেউ কেউ স্থানীয়দের সহযোগিতায় পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করেন। দেশ থেকে টাকা পাঠালে সেই টাকায় দেশে ফিরে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শরণাপন্ন হন।
ওমর ফারুক বলেন, বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের দালাল চক্রের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এ কাজে। এছাড়াও চক্রটি ইউরোপে নেয়ার কথা বলে জাল ভিসা সরবরাহ করত এবং ঘন ঘন অফিস ও মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করত। তাদের কোনো রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্সই নেই। সংশ্লিষ্ট সব দেশের গোয়েন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।