জুমবাংলা ডেস্ক : ফেনীর বহুল আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হ ত্যা মামলা সোনাগাজী পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকনের পরিকল্পনামতো সাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
তাদের দাবি, ষড়যন্ত্র করে নুসরাতের আত্মহ ত্যার ঘটনাকে মনের মাধুরী মিশিয়ে হ ত্যার ঘটনায় রূপ দিয়েছেন মেয়র খোকনসহ কয়েকজন। এর সঙ্গে পিবিআই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও জড়িত।
নুসরাতের শ্নীলতাহানির আগে থেকে মেয়র খোকন তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের ফাঁসানোর পাঁয়তারা করেছেন বলে আদালতে দেয়া যুক্তিতর্কে তারা অভিযোগ করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষ করেছেন।
রোববার সকাল থেকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আসামিপক্ষের আইনজীবীদের অভিযোগ খণ্ডন করবেন।
বৃহস্পতিবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে নুসরাত হ ত্যা মামলার আসামিদের হাজির করার পর যুক্তিতর্কে এ দাবি করে আসামিপক্ষ।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান কবির বেঙ্গল আদালতকে বলেন, ২৮ মার্চ নুসরাতের ওপর শ্নীলতাহানির ঘটনা থেকে শুরু হয় নানা পরিকল্পনা। মামলা করার জন্য নুসরাত থানায় হাজির হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সোনাগাজী পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন থানায় হাজির হন। এ সময় মেয়র মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী মামলার সাক্ষী মোস্তফাকে ধমক দিয়ে বলেন, বল অধ্যক্ষের চেয়ারের সঙ্গে দাঁড়ানো ছিল নুসরাত। নৈশপ্রহরী এ কথা বলেননি। মেয়রের এ কথা আদালতে বর্ণনা করেছেন নৈশপ্রহরী।
আইনজীবীর দাবি, মেয়র খোকন, উপজেলা চেয়ারম্যান লিপটন, কাউন্সিলর মামুন ও স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যান তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলমের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে আত্মহ ত্যার ঘটনাকে মনের মাধুরী মিশিয়ে হ ত্যার ঘটনায় রূপ দিয়েছেন। এর সঙ্গে পিবিআই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জড়িত বলে তার দাবি।
সাক্ষী নাসরিন সুলতানার সাক্ষ্য পাঠ করে আইনজীবী বলেন, ২৭ মার্চ অধ্যক্ষের কক্ষে যাওয়ার আগে নাসরিন সুলতানা ফূর্তি, নিসাত সুলতানা ও নুসরাত পরিকল্পনা করে অধ্যক্ষ শ্নীলতাহা নির মতো কিছু করলে নুসরাত চিৎকার করবে। কিন্তু নুসরাত অধ্যক্ষের কক্ষ থেকে বের হয়ে বাড়ি চলে গিয়েছিল। পরে তার ভাই ও মাসহ এসে অধ্যক্ষের ওপর চড়াও হন।
অধ্যক্ষ গ্রেফতার হলে বিচারের দাবিতে ২৮ এপ্রিল মেয়র খোকন কাউন্সিলর মামুনকে মানববন্ধন করার নির্দেশ দেন।
আইনজীবী বেঙ্গল আদালতকে বলেন, মাদ্রাসায় কোনো ছাত্রাবাস নেই। বলা হয়েছে ছাত্রাবাসে সভা করে নুসরাত হ ত্যার পরিকল্পনা করা হয়। মাদ্রাসার তৃতীয় তলায় ওঠা-নামার একটি মাত্র সিঁড়ি। আসামি দেখানোর জন্য চার্জশিটে বলা হয়েছে সিঁড়ি রয়েছে দুটি।
প্রসঙ্গত সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান ওরফে রাফিকে গত ৬ এপ্রিল গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়। পুলিশ ও পিবিআই এ মামলায় ২২ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে ১২ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পাঁচজনকে চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়।
এর আগে গত ২৭ মার্চ নিজ কক্ষে ডেকে নুসরাতকে শ্লীলতাহানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা। এ ঘটনায় নুসরাতের মা বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করলে পুলিশ সিরাজ-উদ-দৌলাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। ওই মামলা তুলে না নেয়ার কারণে আগুনে পুড়িয়ে হ ত্যা করা হয় নুসরাতকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।