জুমবাংলা ডেস্ক: গাজীপুরের শ্রীপুরে গজারী বন থেকে অজ্ঞাত মরদেহ হিসেবে উদ্ধার হওয়া যুবকের পরিচয় মিলেছে। উদ্ধার হওয়া যুবকের নাম পলাশ (২১)। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। পলাশ উপজেলার হেরাপটকা গ্রামের মহসিনের ছেলে। সোমবার (২১ আগস্ট) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাদিকুর রহমান।
রোববার (২০ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের হায়াতখারচালা গ্রামের কাপাসিয়া-শ্রীপুর সড়কের পাশে নবছুট এলাকার গজারি বন থেকে পলাশের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রায় তিন বছর আগে পার্শ্ববর্তী পটকা গ্রামের মেজবাহ উদ্দিনের মেয়ে সুমনার সঙ্গে বিয়ে হয় পলাশের।
এসআই সাদিকুর রহমান জানান, প্রেমের সূত্রে ধরে বিয়ে ও শ্বশুরের পরিবারের সঙ্গে বিরোধের জেরে পলাশকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন হত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন নিহতের মা পারুল আক্তার।
তিনি আরো জানান, ওইদিন সকালে স্থানীয় কৃষকরা তাদের জমিতে সার দেওয়ার জন্য বনের ভেতরের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় রক্তাক্ত অবস্থায় মরদেহটি দেখতে পান। পরে তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি অবগত করেন। থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এসআই জানান, পলাশের মাথায় ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে বনের গভীরে লাশ ফেলে গেছে।
মা পারুল আক্তার বলেন, পটকা গ্রামের মেজবাহ উদ্দিনের মেয়ে সুমনার সঙ্গে পলাশের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তিন বছর আগে সুমনার বাবার বাড়িতে আমার ছেলেকে আটকে জোর করে সুমনার সঙ্গে বিয়ে দেয় লোকজন। এরপর থেকে আমার ছেলে তাদের বাড়িতেই থাকতো। মাঝেমধ্যে আমাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতো।
তিনি আরো বলেন, আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে সাত মাস আগে শ্বশুর মেজবাহ উদ্দিন ও ভায়রা খোকন আমার ছেলেকে মারধর করে। পরে আমার ছেলে বউ নিয়ে বাড়িতে চলে আসে। তবে গত রমজানের মাঝামাঝি হঠাৎ কিছু না বলে পলাশের বউ আমাদের বাড়ি থেকে চলে যায়। এরপর থেকে আমার ছেলেও বাড়িতে থাকে না। আমার ধারণা, আমার ছেলেকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনেই হত্যা করেছে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার দাবি করছি।
এদিকে পলাশের শ্বশুর মেজবাহ উদ্দিন বলেন, তিন বছর আগে পলাশ আমার মেয়েকে বিয়ে করে। এর পরে তিন মাস আমার বাড়িতে ছিলো। পরে পারিবারিক দ্বন্দ্বে আমার বাড়ি থেকে চলে যায়। সে মাঝেমধ্যে আমার বাড়িতে আসতো। গত দুই সপ্তাহ আগে পলাশ আমাদের বাড়িতে এসে আমার মেয়েকে নাকি ডিভোর্স দিয়েছে, বলে গেছে। এর পর থেকে তার সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজনরা এলে মামলা নেওয়া হবে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কাজ করছে। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবে পুলিশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।