জুমবাংলা ডেস্ক : চট্টগ্রাম থেকে ঢাগামী তূর্ণা নিশীথা ট্রেনটি মঙ্গলবার রাত দুইটা ৪৮ মিনিটে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনের দিকে রওনা হয়।
মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার ট্রেনটিকে তার স্টেশনে প্রবেশের আগেই আউটারে থাকার সিগন্যাল দেয়। কিন্তু তূর্ণা ট্রেনটির চালক (লোকো মাস্টার) সিগন্যাল না মেনে ৬০-৭০ কিলোমিটার বেগে উদয়নে আঘাত করে।
স্থানীয়রা বলছেন, চট্টগ্রাম থেকে আসা তূর্ণা নিশীথা ট্রেনটি যদি আর মাত্র ৩০ সেকেন্ড পরে এই লাইন দিয়ে প্রবেশ করতো তাহলে দুর্ঘটনা হয়তো ঘটতো না।
একই তথ্য জানান বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মিয়া জাহানও। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী ‘তূর্ণা নিশীথা’র চালক ও তার সহকারীর দায়িত্বহীনতার কারণে এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আসলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
এদিকে ট্রেন দুর্ঘটনার পর আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছিলেন আন্তঃনগর মহানগর তূর্ণা নিশীথার চালক (লোকোমাস্টার) তাসের উদ্দিন (৫৫) ও সহকারী চালক অপু দে (৩৫)। অবশ্য ট্রেন দুর্ঘটনায় তাদেরকে দায়ী করে বরখাস্ত করেছে রেলওয়ের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল ১১টায় এ প্রতিবেদক ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত ব্যক্তিদের খোঁজে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। খবর নিয়ে জানতে পারেন ট্রেন দুর্ঘটনায় পুরুষ কেবিনে দু’জন ব্যক্তি ভর্তি আছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় তারাই অভিযুক্ত চালক তাসের উদ্দিন ও সহকারী চালক অপু দে।
একই বেডে দুজন ব্যক্তি শুয়ে আছেন। আপনারা কি ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন? এমন প্রশ্নে প্রথমে কোনো জবাব মেলেনি। একই প্রশ্ন একাধিকবার করার পর উত্তর দেন। একপর্যায়ে চালক তাসের উদ্দিন ও সহকারী অপু দে বলেন, ‘প্লিজ আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, আমাদের একা থাকতে দিন’।
তাদের নাম-ঠিকানা জানতে চাইলে অপু দে বলেন, ভোলা জেলার বাপদা গ্রামের কৃপা চার্য্য দের ছেলে তিনি। সে সময় চালক তাসের উদ্দিন তার বাড়ি মানিকগঞ্জ বলে জানান।
সেই সময় তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে বলেন, ওই ট্রেনের যাত্রী ছিলেন তারা। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন। এর বেশি কথা বলতে উভয়ই নারাজ। তবে কথা বলার সময় তাসের উদ্দিন তার হাত দিয়ে বারবার কপাল চাপড়াচ্ছিলেন। তখন ওদের ভীষণ হতাশাগ্রস্ত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত দেখাচ্ছিল।
দুর্ঘটনাস্থল থেকে তাদের বহনকারী আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. তাজুল ইসলাম বুধবার বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত একাধিক ব্যক্তিকে অ্যাম্বুলেন্সে আখাউড়ায় নিয়ে আসা হয়। এদের মধ্যে পাঁচজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু ওই দুজন আখাউড়া হাসপাতালে ছিলেন। তবে ওরা যে তূর্ণা নিশীথার চালক (লোকোমাস্টার) তাসের উদ্দিন ও সহকারী চালক অপু দে আমি বুঝতে পারিনি।
হাসপাতাল ছেড়ে দেয়ার পর ওদের নাম-ঠিকানা মিডিয়াতে জানাজানি হলে জানতে পারি, ওরাই ছিল আন্তঃনগর মহানগর তূর্ণা নিশীথার বরখাস্তকারী চালক (লোকোমাস্টার) তাসের উদ্দিন ও সহকারী চালক অপু দে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।