আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম ভোট কি ভাগ হবে? তৃণমূলের ভোট কি এআইএমআইএম কাটবে? ওয়েইসির সফর ঘিরে তুমুল আলোচনা। খবর ডয়চে ভেলের।
কার্যত সকলের চোখের আড়ালে পশ্চিমবঙ্গ ঘুরে গেলেন এমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়েইসি। বৈঠক করলেন ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে। আলোচনা হয়েছে আগামী নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে। ওয়েইসি বলেছেন, আব্বাস সিদ্দিকির নেতৃত্বে জোটে লড়বে এমআইএম। জোটের বিষয়ে সিদ্দিকিই সিদ্ধান্ত নেবেন।
পশ্চিমবঙ্গে ৩০ শতাংশের কাছাকাছি মুসলিম ভোট। এবারের ভোটে মুসলিম ভোট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল এবং বিজেপির ভোট শতাংশের তফাত ছিল মাত্র দুই-তিন শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বিজেপি এই পরিমাণ ভোট পেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের কারণে। এ বছরের বিধানসভা নির্বাচনেও মেরুকরণের প্রভাব থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে মুসলিম ভোট ভাগাভাগি হবে, না কি তৃণমূল তা পাবে, এই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। মুসলিম ভোট ভাগ হয়ে গেলে তৃণমূলের বিপদ যথেষ্ট। আর সেখানেই ওয়েইসির পশ্চিমবঙ্গ সফর গুরুত্বপূর্ণ।
১৯৯৮ সালে পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় কংগ্রেস ভেঙে জন্ম৷ দলের প্রতিষ্ঠাতা সভানেত্রী রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রতীক জোড়া ঘাসফুল ও স্লোগান ‘মা-মাটি-মানুষ’৷ ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে ২০১১ সালে এককভাবে ১৮৪টি আসন পেলেও কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিধানসভার ২২৭ টি আসন নিয়ে প্রথমবারের মতো সরকার গঠন করে৷ ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে ২৯৪টি আসনের মধ্যে এককভাবে ২১১টি আসন পেয়ে আবার ক্ষমতায়৷
এমআইএম-এর পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ সংগঠন নেই। তা সত্ত্বেও ওয়েইসি এখানে প্রার্থী দেওয়ার কথা বলেছেন। কিছুদিন আগে বিহারে প্রার্থী দিয়ে যথেষ্ট সাফল্য পেয়েছেন তিনি। পাঁচটি আসন পেয়েছে এমআইএম। সেই মডেলেই পশ্চিমবঙ্গে আসন দিতে চাইছেন তিনি। অন্য দিকে ফুরফুরা শরিফের পিরজাদাও তৃণমূলবিরোধী কথা বলছেন অনেক দিন ধরে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়ার কথা বলেছিলেন কিছু দিন আগে। ওয়েইসি কি সেই কারণেই পিরজাদার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন? ফুরফুরা শরিফের সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে ওয়েইসির আসন সমঝোতার কথা হয়েছে। রাজ্যের বেশ কিছু অঞ্চলে তাঁরা একসঙ্গে প্রার্থী দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে মুসলিম ভোট ভাগ হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকছে।
রোববার কাউকে না জানিয়ে ওয়েইসি কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে সোজা হুগলিতে ফুরফুরা শরিফে পৌঁছে যান। জানিয়ে এলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ তাঁকে আটকাতে পারে, এই ধারণা তাঁর ছিল বলে এমআইএম-এর মুখপাত্র জানিয়েছেন। বৈঠকের পর তিনি ফের হায়দরাবাদে ফিরে যান।
তৃণমূল নেতা সৌগত রায় জানিয়েছেন, ওয়েইসি আসলে বিজেপির সুবিধা করানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন। এমআইএম বিজেপির বি টিম। তবে এমআইএম এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।