জুমবাংলা ডেস্ক : পার্বত্য জেলা বান্দরবানে একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে বন্দুকধারীদের হামলার পর চারজন পর্যটক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। অবশ্য এদের কেউ গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হননি। এরা সবাই প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নিজ বাড়িতেই রয়েছেন বলে জানায় পুলিশ। খবর বিবিসি বাংলা’র।
বান্দরবান সদর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলছেন, তার ভাষায় ‘পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা’ শনিবার সন্ধ্যার এই হামলার সাথে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তাদের বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, যে গাড়িটিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে সেটি স্থানীয়ভাবে ‘চাঁদের গাড়ি’ নামে পরিচিত। হামলার সময় গাড়িটিতে ১৭ জন যাত্রী ছিলেন। এদের সবার বাড়ি পার্শ্ববর্তী জেলা রাঙামাটিতে। এরা সবাই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মারমা সম্প্রদায়ের সদস্য বলে জানা গেছে।
তারা বান্দরবানের রুমা এলাকায় বেড়াতে গিয়েছিলেন।
হামলার কারণ এখনো জানা যায়নি বলে পুলিশ উল্লেখ করছে।
ওসি শহীদুল চৌধুরী জানান, শনিবার সন্ধ্যার দিকে ঘটনাটি ঘটে কুহালং ইউনিয়নের গলাচিপা নামক জায়গায়।
পরে রাত ১০টার পর সেনাবাহিনীর বান্দরবান সদর জোন উইং একটি সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার বিস্তারিত জানায়।
সেই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনু।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাসিন্দাদের একটি ক্লাবের আয়োজনে ১৯ জনের একটি দল বগালেকে ঘুরতে গিয়েছিল।
বগালেকে ঘুরে আবার রাঙামাটির দিকে ফিরে যাচ্ছিল তারা। শনিবার সন্ধ্যার একটু আগে আগে বান্দরবান আর রাঙামাটির মাঝামাঝি এলাকার গলাচিপা নামে একটি জায়গায় পৌঁছায় তাদের গাড়ি। সেসময় ওই চলন্ত গাড়িটিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে বন্দুকধারীরা।
বন্দুকধারীরা গাড়িটিকে লক্ষ্য করে ৪০ থেকে ৫০ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে বলে সেনাবাহিনী সংবাদ সম্মেলনে জানায়।
‘গাড়ির চাকায় একটি গুলি লাগে। দুটি গুলি লাগে গাড়ির বনেটে’, সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে বিবিসিকে বলেন মনিরুল ইসলাম মনু।
এ ঘটনার পর পরই গাড়িটির আরোহীরা বান্দরবানের সীমানা পার হয়ে বাঙ্গালহালিয়া বাজার এলাকায় চলে যায়।
সেখানে হামলার শিকার গাড়িটি ছেড়ে দিয়ে অন্য গাড়ি ভাড়া করে রাঙামাটিতে নিজেদের বাড়ির দিকে চলে যান তারা।
মনিরুল ইসলাম বলেন, যে এলাকাটিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে সেটি বেশ দুর্গম এবং নির্জন। সন্ধ্যার পর ওই এলাকায় মানুষের চলাচল থাকে না বললেই চলে।
তিনি আরো বলেন, ‘দুর্গম হওয়ার কারণে এলাকাটিতে কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তৎপর রয়েছে যারা বিচ্ছিন্নভাবে কর্মকাণ্ড চালিয়ে থাকে।’ এই ঘটনাটির পেছনে তাদের হাত থাকতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আগে ওই এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটতো। তবে এই গোষ্ঠীগুলো স্থানীয় অনেক দলের সমর্থক বলে নিজেদের দাবি করে থাকে। তবে এ ধরণের যাত্রীবাহী চলন্ত গাড়িতে গুলির কারণ বোঝা যাচ্ছে না।’
বান্দরবান থানার ওসিও বলছেন, প্রায়ই পাহাড়ে এ ধরণের অশান্ত পরিবেশ হয়, নানা কারণে এ ধরণের ঘটনা ঘটে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় এই ঘটনাটিও ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে মামলার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।