আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফার্সি ১৩৫৬ সালের ১৯ দেই মোতাবেক ১৯৭৮ সালের ৯ জানুয়ারিতে ইরানের ধর্মীয় নগরী কোমে শাহ বিরোধী এক গণ-অভ্যুত্থান হয়। ওই অভ্যুত্থানে শাহী জান্তার গুলিতে মারা যায় বহু মানুষ। এ দিবস উপলক্ষে দেয়া এক ভাষণে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, পরমাণু সমঝোতায় যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসার ব্যাপারে ইরানের শর্তারোপ এবং ইরানের প্রতিরক্ষা সামর্থ্য ও মধ্যপ্রাচ্যে দেশটির উপস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরে এসব বিষয়ে তিনি তার অবস্থান তুলে ধরেন। খবর পার্সটুডে’র।
সর্বোচ্চ নেতা তার ভাষণে কোম শহরে শাহ বিরোধী গণ অভ্যুত্থানকে মার্কিন বিরোধী প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, কোমের গণ অভ্যুত্থান ছিল মার্কিন বৃহৎ মূর্তির ওপর ইব্রাহিমি কুঠারের প্রথম আঘাত এবং এ আঘাত এখনো অব্যাহত রয়েছে। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন শত্রুতামূলক নীতির কথা উল্লেখ করে তিনি নির্বাচন পরবর্তী আমেরিকার বর্তমান বিশৃঙ্খল অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যে কেলেঙ্কারি হয়ে গেল তা ওই দেশটির লিবারেল ডেমোক্রেট ব্যবস্থার অকার্যকারিতা ও দুর্বলতাই ফুটে উঠেছে। কংগ্রেস ভবনে জনতার হামলার ঘটনা সারা বিশ্বে আমেরিকার শত্রু মিত্র সবার কাছেই হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র, মানবাধিকার কিংবা যে আদর্শের কথাই বলুক না কেন তার কোনো মূল্য নেই। কারণ নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের আসল চেহারা প্রকাশ হয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ২০০৯ সালে ইরানে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল সেই পরিস্থিতি এখন খোদ মার্কিন কংগ্রেসেই ঘটে গেল এবং এটা তাদের কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। এমনকি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এটা মার্কিন ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের উপস্থিতি, প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারেও গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা বহুবার বলেছি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দায়িত্ব পাশ্চাত্যের। কারণ এ নিষেধাজ্ঞা ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অপরাধ এমনকি করোনা পরিস্থিতিতেও নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রয়েছে।
সম্প্রতি মার্কিন নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার শর্ত হিসেবে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের তৎপরতা এবং দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা নিয়ে সমাধানে আসতে হবে। এ ব্যাপারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, ইরানের কর্মকর্তাদেরকে এমনভাবে কাজ করতে হবে যাতে এ অঞ্চলে তাদের বন্ধু ও সমর্থকদের হাত আরো শক্তিশালী হয় এবং এ অঞ্চলে ইরানের শক্তিশালী উপস্থিতি বজায় থাকে।
পরমাণু সমঝোতা সম্পর্কে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, প্রতিপক্ষ তাদের কোনো প্রতিশ্রুতিই পালন করেনি। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় ইরানের জাতীয় সংসদে ‘স্ট্র্যাটেজিক অ্যাকশন প্ল্যান’ নামে যে বিল পাস করা হয়েছে তাকে সঠিক, সম্পূর্ণ যৌক্তিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন সর্বোচ্চ নেতা। তিনি বলেন আমেরিকা পরমাণু সমঝোতায় কবে ফিরবে, আদৌ ফিরবে কি ফিরবে না-সে ব্যাপারে আমাদের কোনো তাড়াহুড়া কিংবা মাথাব্যথা নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।