জুমবাংলা ডেস্ক : প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাই জগলুল ওয়াহিদের মৃত্যুর পরদিন তার অ্যাকাউন্ট থেকে এক কোটি ৪০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন ভারতীয় নাগরিক আঞ্জু কাপুর। তিনি জগলুল ওয়াহিদের দ্বিতীয় স্ত্রী। মৃত্যুর সংবাদ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে এভাবে টাকা উত্তোলনের ঘটনায় গুলশান থানায় প্রতারণার মামলা করেছেন জগলুল ওয়াহিদের প্রথম স্ত্রীর সন্তান মুশফিকা মোস্তফা (৩৫)।
গত ২০ ডিসেম্বর দণ্ডবিধির ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টের স্বতপ্রণোদিত আদেশের পর সিটি ব্যাংকে আমার বাবার ব্যাংক হিসাবের স্টেটমেন্ট সংগ্রহের জন্য যাই। তখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাকে ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রদান করে। ঐ স্টেটমেন্টে আমি দেখতে পাই যে, আমার বাবার মৃত্যুর পরের দিন ১১ অক্টোবর সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টার মধ্যে যে কোন সময় আমার বাবার হিসাব থেকে চেক মারফত এক কোটি ৪০ লাখ টাকা নগদ উত্তোলন করা হয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে উক্ত টাকা উত্তোলনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা আমাকে জানান যে, আসামি আঞ্জু কাপুর আমার বাবার মৃত্যুর খবর গোপন করে উক্ত টাকা উত্তোলন করেছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, প্রচলিত আইন অনুযায়ী আমার বাবার মৃত্যুর পর আঞ্জু কাপুরের ম্যানডাটি (জীবিত অবস্থায় টাকা উত্তোলনের অনুমতি প্রদান) ক্ষমতা আর বলবত থাকে না। তাই উনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে আমার বাবার মৃত্যুর খবর অবগত না করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অকার্যকর ম্যানডাটির উপর ভিত্তি করে ঐ টাকা উত্তোলন করে। যা আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্য ও হকদার।
মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) এই মামলার তদন্তে অগ্রগতির বিষয়টি ক্ষীণ উল্লেখ করে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টিতে আনেন মুশফিকার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
তিনি বলেন, মামলার অপরাধ আমলযোগ্য। আমলযোগ্য অপরাধে পুলিশের দায়িত্ব প্রথমেই আসামিকে গ্রেফতার করা। কিন্তু মামলা দায়েরের পর পুলিশ এখনো আঞ্জু কাপুরকে গ্রেফতার করেনি। এরপরই হাইকোর্ট মামলার তদন্তের সর্বশেষ কি অবস্থা তা জেনে হাইকোর্টকে অবহিত করতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিককে নির্দেশ দিয়েছেন। ঐ নির্দেশের পরই সংশ্লিষ্ট আইন কর্মকর্তা গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন। এবং তদন্তের অগ্রগতির বিষয়টি আজ আদালতকে অবহিত করবেন।
মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশশারা মোস্তফা। তারা জানান, ১৯৮৪ সালে তার মাকে নিয়ে তাদের বাবা গুলশানে দশ কাঠা জমির উপর নির্মিত এই বাড়িতেই বসবাস করছিলেন। তাদের জন্ম এই বাড়িতে। ২০০৫ সালে তাদের মা-বাবার বিচ্ছেদ হয়। পরে আঞ্জু কাপুর নামে এক ভারতীয়কে বিয়ে করেন। আঞ্জু কাপুর একাই ঐ বাড়ির ভোগদখল করছেন। তারা ঐ বাড়িতে প্রবেশ করতে চাইলেও তা করতে দেননি। এরপর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গত ২৬ অক্টোবর হাইকোর্ট মোস্তফা জগলুলের দুই কন্যাকে গুলশানের ঐ পৈত্রিক বাড়িতে তুলে দেয় পুলিশ। একইসঙ্গে তাদের নিরাপত্তা দেয় পুলিশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।