নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর : নাম শুনেই অনেকের হয়তো ভ্রু কুচকে যাবে। আবা’স কিচেন? সেটা আবার কি? তাদের জন্য বলছি আবা’স কিচেন হচ্ছে রুচিশীল মানুষদের চিন্তা চেতনার ফসল। তিন সত্ত্বাধীকারীর নামের প্রথম লেটার নিয়ে নামকরণ করা হয়েছে চাইনিজ, ইন্ডিয়ান, ম্যাক্সিকান, থাইসহ নানা ধরণের মুখরোচন ফুড তৈরি করা এই রেস্টুুরেন্ট ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানটির।
A-ফর আরমান, B-ফর বিল্লাল এবং A-ফর আলামিন। মানে হচ্ছে আরমান, বিল্লাল, আলামিনের রান্না ঘর। মালিক তিন জনের দু’জনই সাংবাদিক। একজন আব্দুর রহমান আরমান কালীগঞ্জ উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ইত্তেফাকের সাংবাদিক। আরেকজন হচ্ছেন বিল্লাল হোসেন। তিনি একই সাংবাদিক সংগঠনের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সাংবাদিক।
প্রায় দুই মাস নানা প্রস্তুতির পর আগামীকাল (১৯ মার্চ) বৃহস্পতিবার এর উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধন উপলক্ষে ওইদিন বাদ মাগরিব মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। তাই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে স্থানীয় সবাইকে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে।
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার একেবারে প্রাণকেন্দ্রে আবা’স কিচেনের অবস্থান। কালীগঞ্জ পৌর এলাকার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হাসনাহেনা মার্কেটের দু’তলায় অবস্থান আবা’স কিচেন নামের এই রেস্টুরেন্টি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রীত। আবা’সে প্রবেশে সিঁড়ি বেয়ে উঠার সময়ই আপনি রুচি আর নান্দনিককার স্পর্শ পাবেন। সিঁড়িতে উঠতে হাতের ডানে এবং বামে দেখা মিলবে সবুজ কাঁচা ঘাসের। আর আবা’সের সিঁড়ি বেয়ে উঠার সময় দু’পাশের সবুজ ঘাস যেন আপনার দু’চোখের প্রশান্তি।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রীত আবা’স কিচেনের কাচের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশেই আপনার শরীরের সকল ক্লান্তি দূর হবে। শীতল হবে আপনার শরীর। প্রবেশের শুরুতেই আপনি একটু হচকচিয়ে যাবেন। ভাবেন এটা আবার কোথায় এলাম? তবে রেস্টুরেন্টে প্রবেশের পর তরুণ ইন্টারিয়র জোনাহিদ সাগর কর্তৃক সুতা দিয়ে তৈরি কালীগঞ্জের মানচিত্র দেখে আপনি নিশ্চিত হবেন আপনি কালীগঞ্জেই আছেন। আবা’সের ইন্টারিয়র ডিজাইন করেছেন সাংবাদিক জোনাহিদ হাসান সাগর এবং এর পুরো ব্রেন্ডিং করেছেন বাংলা গ্রাফস কমিউনিকেশনের সত্ত্বাধীকারী সাংবাদিক মো. রিয়াদ হোসাইন।
আবা’স কিচেনের দেয়ালে দেয়ালে ইউরোপ আর মধ্য প্রাচ্যের আকর্ষণীয় লোকেশনের এইচডি ছবি সাটানো আছে। চাইলে আপনি সেই লোকেশনের সামনে দাঁড়িয়ে একটি সেলফি তোলে নিতেই পারেন। তবে আবা’স কিচেন শিশুদের কথা চিন্তা করে রেখেছেন কিটস জোনও। রেস্টুরেন্টের একটি দেয়াল কার্টুন দিয়ে রাঙ্গানো হয়েছে। সেখানে আপনার শিশুটিরও একটি সেলফি নিতে পারেন। এতে সে পুলকিত হবে। আপনার শিশু আবাসে রাখা এ্যাকুরিয়ামে দেখতে পাবে লাল-সোনালী মাছের সাঁতার কাটার খেলা।
আবা’সে পাবেন বিশ্বকবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পোর্ট ফলিও। এ ছাড়াও আছে মজার মজার খাবারের নানা আইটেমের দৃষ্টি নন্দন ছবির ফ্রেম। রেস্টুরেন্টের সোনালি আলোয় একটু বেশিই রোমাঞ্চিত হবেন আপনি। আকর্ষণীয় টেবিল-চেয়ার দেখে মনে হবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষের রুচি আছে। কারণ এরআগে এই ধরণের আসবাবপত্র স্থানীয় আর কোন রেস্টুরেন্টেই ব্যবহার হয়নি। পরিবার নিয়ে এখানে আসতে পারেন এমন কথা চিন্তা রেখেই করা হয়েছে আবা’সের আসবাবপত্র। আর খাবার অর্ডার দেওয়ার পর যে পাত্রে আপনাকে খাবার পরিবেশন করবে তা তো আরো আকর্ষণীয়। রেস্টুরেন্টের ভিতরে রয়েছে পরিবেশ বান্ধব গাছ। যা সুদৃশ্য মাটির পাত্রে পাটের সিকায় ঝুলানো রয়েছে।
দ্বিতল ভবন রেস্টুরেন্টির ভেতরে রৌদ্র না থাকলেও দেখবেন আপনার মাথার উপরে ছাতা ঝুলছে। এখানে আবা’সের মালিক পক্ষ রঙ্গের জোয়ার এনেছেন। কারণ আপনার মাথার উপরে উল্টো করে রাখা ছাতাগুলোতে অসংখ্য রঙ্গের ব্যবহার করা হয়েছে। জীবন রঙ্গিন তাই নানা রঙ্গের ছাতাগুলোর দিকে তাকালে আপনার ভালোই লাগবে। ভাল লাগবে আবা’সে রাখা বিশাল স্ক্রীনের টিভিও। কারণ এখানকার সাউন্ড সিস্টেম দেখে মনে হবে আপনি সিনেমা হলে বসে খানা-পিনা করছেন। আছে ওয়েফাই সুবিধা। স্বাস্থ্য সবেচতনতার কথা চিন্তা করে রেস্টুরেন্টটি সম্পূর্ন ধুমপান মুক্ত রাখা হয়েছে। এখানে সুদক্ষ বাবুর্চি দ্বারা মজাদার সব রান্না-বান্না হয়। আশা করছি এখানকার পরিবেশ, স্বাস্থ সচেতনতা এবং রুচি আর নান্দনিকতা আপনার মন কেড়ে নিবেই। তাই আপনি আপনার পরিবার নিয়ে নিশ্চিন্তে আবা’স কিচেনে ঘুরে যেতে পারেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।