স্পোর্টস ডেস্ক: ফরাসি উইঙ্গার কিংসলে কোম্যানের শেষ মুহূর্তের গোলে অস্ট্রিয়ান চ্যাম্পিয়ন রেড বুল সালজবার্গের সাথে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬’র প্রথম লেগের ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করেছে বায়ার্ন মিউনিখ।
ম্যাচের ৯০ মিনিটে কোম্যানের কোনাকুনি শটে বায়ার্ন কোনমতে পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা পায়। এর আগে ২১ মিনিটে বদলী খেলোয়াড় জুনিয়র আডামুসের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল সালজবার্গ। এই গোলের পর ২০১৭ সালের পর এই প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এ্যাওয়ে ম্যাচে পরাজয়ের শঙ্কায় পড়ে বেভারিয়ান্সরা। দ্বিতীয়ার্ধে অনেকটা কষ্ট করেই লড়াইয়ে ফিরতে হয়েছে বায়ার্নকে। ম্যাচ শেষে গতকাল বায়ানের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা থমাস মুলার বলেছেন, ‘অনেকেই হয়ত আজ বলবে সালজবার্গের এই ম্যাচটা জয়ী হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমি মনে করি এই ফলাফলটাই সঠিক হয়েছে। আমি মনে করি দ্বিতীয়ার্ধে একটি বিষয় অন্তত নিশ্চিত হয়েছে যে আমরা ম্যাচ জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে খেলেছি। এই মুহূর্তে আমরা সঠিক পথে নেই। প্রতিটি ম্যাচে আমাদের জয়ের সেই মানসিকতা ফিরিয়ে আনতে হবে।’
শনিবার পুঁচকে দল বোচুমের কাছে বুন্দেসলিগায় ৪-২ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে অস্ট্রিয়ায় খেলতে এসেছিল বায়ার্ন। স্বাভাবিক ভাবেই দলের মানসিকতা খুব একটা ভাল ছিলনা। কিন্তু আরো একবার প্রথমেই গোল হজম করার মাধ্যমে দলের রক্ষনভাগের দূর্বলতা ফুটে উঠলো। এই একটি জায়গায় কোচ জুলিয়ান নাগলেসম্যানকে আরো কাজ করতে হবে বলে সংশ্লিষ্ঠদের মত। ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে নিকলাস সুয়েলের ভুলে ব্রেন্ডন এ্যারোনসন গোলের ভাল একটি সুযোগ পেয়েছিলেন। বায়ার্নের রক্ষনভাগের দূর্বলতার সুযোগ বারবার কাজে লাগিয়ে একের পর এক আক্রমন চালিয়ে গেছে সালজবার্গ। যদিও বায়ার্নও সুযোগ কম পায়নি। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি। ২১ মিনিটে নিজেদের সুযোগ শতভাগ কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় সালজবার্গ। কাউন্টার এ্যাটাক থেকে মালির মিডফিল্ডার মোহাম্মদ কামারার লম্বা পাস থেকে প্রথম সুযোগেই আডামু কার্লিং শটে বল জালে জড়ালে লিড পায় সালজবার্গ। এর আগে ১২ মিনিটে নোহা ওকাফোরের ইনজুরির সুবাদে বদলী বেঞ্চ থেকে মাঠে নেমেছিলেন আডামু। বিরতির আগ পর্যন্ত আডামু ও তার সতীর্থ ফরোয়ার্ডরা মিলে বায়ার্নের রক্ষনভাগকে ব্যস্ত করে তুলেছিলেন। বিরতির ঠিক আগে স্বাগতিকরা একটি পেনাল্টির আবেদন করে তাতে সফল হননি।
দ্বিতীয়ার্ধে অনেকটা চাপে থেকে মাঠে নামে বায়ার্ন। কিন্তু ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিজেদের করে নেয়। সালজবার্গের পুরোপুরি রক্ষনাত্মক কৌশলকে কাজে লাগায় বেভারিয়ান্সরা। ম্যাচের শেষভাগে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে বায়ার্ন। কোম্যানের একটি জোড়ালো শট দারুন দক্ষতায় রক্ষা করেন সালজবার্গের গোলরক্ষক ফিলিপ কোহেন। এরপর কাউন্টার এ্যাটাক থেকে লেরয় সানের শট রুখে দিয়ে সালজবার্গকে আবারো রক্ষা করেন কোহেন। ম্যাচ শেষের ১০ মিনিট আগে সানের ভুলে সালজবার্গ ম্যাচের ভাগ্য প্রায় নির্ধারন করে ফেলেছিল। কিন্তু বেঞ্জামিন পাভার্ড লাইনের উপর থেকে বল ক্লিয়ার করলে আডামুর দ্বিতীয় গোল পাওয়া হয়নি। বায়ার্নের ধৈর্য্য শেষ পর্যন্ত কাজে এসেছে। ম্যাচ যখন ইনজুরি টাইমে দিকে গড়াচ্ছে ঠিক সেই মুহূর্তে অস্ট্রিয়ান রক্ষনভাগকে ভেঙ্গে কোম্যান বল জড়িয়ে বায়ার্ন শিবিরে স্বস্তি ফিরিয়ে আনেন। পাভার্ডের ফ্লোটিং ক্রস থেকে থমাস মুলার কোম্যানের দিকে বল ফ্লিক করেন দেন। আর সেই বল থেকে কোম্যান পাঁচদিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ থেকে বায়ার্নকে রক্ষা করেন।
ম্যাচ শেষে সালজবার্গ স্ট্রাইকার করিম আডেইয়েমি বলেছেন, ‘শেষ মুহূর্তে এই ধরনের গোল হজমের পর পরাজয়ের মত অনুভূতি হয়। কিন্তু তারপরেও বায়ার্নের মত একটি দলের বিপক্ষে ১-১ গোলের ড্রও ভাল ফলাফল বলেই আমি মনে করি। আমরা এখনো তরুন, আমাদের মধ্যে পূর্ণ উদ্দীপনা রয়েছে, জয়ের ক্ষুধা রয়েছে। আমরা পরের ম্যাচেও বায়ার্নকে অস্বস্তিতে ফেলতে চাই।’
আগামী ৮ মার্চ মিউনিখের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে দুই দল আবারো মুখোমুখি হবে। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।