সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের ওয়ারলেছ গেট এলাকায় বেসরকারি হাসপাতাল হেলথ কেয়ার মেডিকেল সেন্টারে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এক মেয়ে নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
নিহত নবজাতকটি হরিরামপুর উপজেলার ঘুনিগালা গ্রামের সুজন বিশ্বাসের কন্যা। গত বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটার দিকে হেলথ কেয়ার মেডিকেল সেন্টারে সিজার অপরেশনের মাধ্যমে তার জন্ম হয়।
শনিবার (১৩ জুলাই) ভোর পাঁচটার দিকে ওই নবজাতকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজে নেয়া হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত নবজাতকের বাবা সুজন বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, আমার বাচ্চার ওজন একটু কম হয়েছিল। বাচ্চা জন্মের পর হাসপাতালের লোকজন তেমন কোন চিকিৎসেবা বা পরামর্শ দেয়নি। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে হঠাৎ আমার বাচ্চার নি:শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল এবং চোখ বড় বড় হয়ে গিয়েছিল। এটা জানাতে ডাক্তারের খোজ করেও পাইনি। এরপর হাসপাতালের একজন নার্স আমার বাচ্চাকে সদর হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যেতে বলেন। সদর হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে ডাক্তার আমাকে জানায়, বাচ্চার ওজন কম। এই বাচ্চাকে স্পেশাল ট্রিটমেন্টে রাখা দরকার ছিল। এখন এত রাতে নিয়ে এসেছেন এখন কি করবো? আগামীকাল নিয়ে আসেন। তখন শিশু ডাক্তার দেখিয়ে প্রোপার ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরপর হেলথ কেয়ার মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে আসি। এরপর মাঝরাতে আবারো বাচ্চার একই সমস্যা দেখা দেয়। তখনও ডাক্তার না পেয়ে নার্সের কাছে যাই। কয়েকদফা ডাকাডাকির পর নার্স বলে, এরকম সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক। চিন্তা কইরেন না, ঠিক হয়ে যাবে। এরপর ভোর পাঁচটার দিকে আবারও বাচ্চার একই সমস্যা হয়। তখন তড়িঘড়ি করে কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে নেওয়ার পর সেখানকার ডাক্তার জানায় বাচ্চা আর জীবিত নেই।
সুজন বিশ্বাস আরো জানান, হেলথ কেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় বাচ্চাটি মারা গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি বাচ্চার সমস্যা নিয়ে আগে থেকেই জানাতো তাহলে আরো আগেই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেত। কিন্ত তারা আমার বাচ্চার কোন সমস্যা আছে কি’না বার বার জিজ্ঞাসা করার পরও সেটা জানায়নি। রাতের বেলা যখন সমস্যা হয়েছে তখন কোন ডাক্তারই পাইনি। এটা কি আমাদের প্রতি অবহেলা না? আমার বাচ্চা তো আর ফিরে আসবে না। কিন্ত যাদের কারণে আমার বাচ্চাকে হারিয়েছি, আমি তাদের বিচার চাই।
হেলথ কেয়ার মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল করিম বলেন, বাচ্চা জন্মের পর সুস্থ ছিল। এজন্য কোন শিশু ডাক্তার দেখানো হয়নি। যখন সমস্যা হয়েছে তখন আমাদের ডিউটি ডাক্তার ছিলনা। তবে নার্সরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছিল। সদর হাসপাতালে নেয়ার পর তারা চিকিৎসা ও পরামর্শ দিয়ে আবার আমাদের কাছে পাঠিয়েছে। পরে ভোরবেলা আবারো বাচ্চার সমস্যা বাড়লে তাকে কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজে নেয়া হয়। পরে বাচ্চাটি সেখানেই মারা যায়।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা: মোকছেদুল মোমিন বলেন, ভুক্তভোগীরা আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।