জুমবাংলা ডেস্ক : জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়েছে। তবে জাতীয় এই বিশেষ দিবসটির মূল অনুষ্ঠানের মাঠে লোকজনের তেমন একটা সমাগম ছিল না। ফলে অনেকটা ফাঁকা মাঠেই বক্তারা তাদের বক্তব্য দিয়েছেন। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
তবে অনুষ্ঠান কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘রমজান মাস হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোনো কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান করেননি। লোকজন তুলনামূলক ভালোই উপস্থিত হয়েছে বলেও দাবি তাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ইসলামপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের প্রত্যুষে ৩১ তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটি শুভ সূচনা হয়। এতে অংশ নেন উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, সকল সরকারি-আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ।
সকাল ৮টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ‘স্যালোটিং ডায়াসে’ বক্তব্য দেন অতিথিরা। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার গোলাম মোস্তফার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন ইউএনও মো. সিরাজুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি ধর্মমন্ত্রী ও জামালপুর-২ ইসলামপুর আসনের সংসদ সদস্য মো. ফরিদুল হক খান দুলাল অনুপস্থিত থাকায় প্রথমেই বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এসএম জামাল আব্দুন নাছের বাবুল এবং উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মানিকুল ইসলাম মানিক।
এ সময় অনুষ্ঠানে মঞ্চে কিছু অতিথিকে দেখা গেলেও মঞ্চের সামনে কোনো লোকজন ছিল না। এছাড়া অনুষ্ঠানের দাওয়াতপত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ এবং ক্রীড়া প্রতিযোগিতার কথা উল্লেখ থাকলেও, তার আয়োজন করা হয়নি।
উপজেলার পলবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহদাৎ হোসেন স্বাধীন বলেন, ‘অনুষ্ঠানের আয়োজকেরা স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে সাধারণ লোকজনদের সেভাবে উপলব্ধি করাতে পারেনি। তার ভাষ্য, লোকজনকে স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য বুঝাতে হবে।’
গাইবান্ধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জীবন বাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধে অংশ নিয়ে এই দেশকে স্বাধীন করেছি। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যে কারণেই হোক না কেন, যদি লোকজন না আসে, সেটা দুঃখের বিষয়। ঠিকমত দাওয়াত দেয়া হলে, অবশ্যই লোকজন হতো।’
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে লোকজন কেন আসেনি, এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মানিকুল ইসলাম মানিক বলেন, আগামীতে এসব অনুষ্ঠানে আরও লোকজন কম হবে। কারণ অতিমাত্রায় দুর্নীতি করায় সাধারণ লোকজন প্রশাসন এবং ক্ষমতাসীনদের দলের লোকের কথা শুনতে চাইবে না।’
এই বীর মুক্তিযোদ্ধা আরও বলেন, ‘লোকজন না আসায় স্বাধীনতা দিবসের মতো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাঠ ফাঁকা থাকায় আমরা অবাক হয়েছি। এটা মেনে নেয়া যায় না।’
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এসএম জামাল আব্দুন নাছের বাবুল বলেন, ‘মঞ্চে লোকজন ছিল। তবে রমজানের কারণে অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করায় মঞ্চের সামনের অংশে লোকজন কম হয়েছিল। তাছাড়া ওই অনুষ্ঠানে সাধারণ লোকজনের উপস্থিত হওয়ার কথা নয়। মূলত উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, আনসার এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ও সদস্যগণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।’
ইউএনও মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যথাযথভাবে দাওয়াত দেয়া হয়েছে। রমজান মাসেও তুলনামূলক লোকজন ভালোই হয়েছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।