জুমবাংলা ডেস্ক : পাবনার বেড়ায় ঘোড়া জবাই করে এর মাংস খাওয়ার ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুসল্লিরা। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন। এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে এলাকায় ফিরতে পারছে না ঘোড়ার মাংস খাওয়া সেই যুবকরা।
শনিবার (২৯ জুন) রাতে বেড়া উপজেলার হাঁটুরিয়া-নাকালিয়া ইউনিয়নের চর পেঁচাকোলা গ্রামের নদীর পাড়ে এলাকার ৬-৭ জন যুবককে সঙ্গে নিয়ে ঘোড়াটি জবাই করেন স্থানীয় এক ক্লিনিক মালিক।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেড়ার একটি ক্লিনিকের মালিক মহিউদ্দিন চৌধুরী স্থানীয় মানিক হোসেন, আব্দুস সোবহান, হিরো আলমসহ কয়েক যুবককে ঘোড়ার মাংস খাওয়াবেন বলে তাদের ঘোড়া কেনার জন্য বলেন। তার কথামতো ওই যুবকরা ঘোড়া কিনে আনেন। এরপর সেই ঘোড়া নদীর পাড়ে জবাই করেন এবং মাংস রান্না করে সবাই মিলে খান। তারা এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিলে তা মূহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে এবং এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর সোমবার বিকেলে পেঁচাকোলা চারমাথা মোড়ে এলাকার মুসল্লি ও সাধারণ জনতা বিক্ষোভ করেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন তারা।
হাঁটুরিয়া চারমাথা বাজারের ব্যবসায়ী আলামিন, আশরাফুল আলম খোকন ও আবু জাফর বলেন, ধর্মীয় অপব্যাখ্যা দিয়ে ঘোড়ার মাংস খাওয়া হয়েছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের প্রত্যেকের শাস্তি চাই।
ঘোড়ার মাংস খাওয়ার মূল পরিকল্পনাকারী মহিউদ্দিন চৌধুরী গাঢাকা দেওয়ায় ও মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বেড়া উপজেলার মডেল মসজিদের ইমাম মোস্তফা কামাল এবং বেড়া শাহপাড়া মসজিদের ইমাম শাহারিয়ার বিন জাকারিয়া বলেন, ‘হাদিসে ঘোড়ার মাংস খাওয়া না খাওয়ার পক্ষে-বিপক্ষে বলা হয়েছে। সাধারণ ক্ষেত্রে ঘোড়ার মাংস খাওয়া মাকরুহ (অনুচিত)। তবে এ থেকে আমরা বিরত থাকবো এবং পরিবেশ ও সমাজ যাতে উত্তেজিত না হয়, সেভাবে কাজ করার চেষ্টা করবো।’
বেড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি ধর্মীয় বিষয় নিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। তবে ঘোড়ার মাংসের ফাইবার মোটা এবং এটার স্বাদ আমাদের দেশি গরু-ছাগলের মতো ভালো না। চর্বির পরিমাণটা কম আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে ঘোড়ার সংখ্যা বেশি না। আমরা যদি এভাবে ঘোড়াকে মাংস হিসেবে খাই, তাহলে একসময় আমাদের দেশে ঘোড়া বিলুপ্তির পথে চলে যাবে। তাই ঘোড়া না খাওয়াই উচিত।’
বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি। তবে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় যে উত্তেজনা বিরাজ করছে, সে সম্পর্কে পুলিশ অবগত এবং যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সজাগ রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।