নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্ব মা দিবস, ২০২৪ উপদযাপন উপলক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন মহিলা বিষয়ক অধিদফতর ১১ জন ‘স্বপ্নজয়ী মা’কে সম্মাননা প্রদান করে। সোমবার (১৩ মে) বিকেল তিনটায় রাজধানী ঢাকার ইস্কাটন এলাকায় মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের হলরুমে অনুষ্ঠিত সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি)।
অনুষ্ঠানে মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের মহাপরিচালক কেয়া খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক। এ সময় মন্ত্রণালয়ের জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তাসহ অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ‘স্বপ্নজয়ী মা’ সম্মাননা প্রদান করা হয় পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলার রাজাপুর গ্রামের রহিমা খাতুনকে। সম্মাননা প্রদানকালে একটি ক্রেস্ট, একটি সার্টিফিকেট এবং বিশ হাজার টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ড প্রদান করা হয়।
রহিমা খাতুন এক লড়াকু মায়ের নাম। মাত্র ২৯ বছর বয়সে বিধবা হন তিনি। তখন তার সন্তান সংখ্যা ছিল চার জন। সর্বকনিষ্ঠ সন্তান ছালমা খাতুনের বয়স তখন মাত্র দেড় বছর। স্বামীর তেমন কোন সম্পদ ছিলনা। সেলাইয়ের কাজ করে এবং সামান্য কিছু জমির উপর নির্ভর করে খেয়ে না খেয়ে অতিকষ্টে তার সন্তানদের লালন পালন করেছেন এই মা।
মাত্র পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা রহিমা খাতুন নিজে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ না পেলেও বন্ধ হয়ে যায়নি তার স্বপ্ন। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন নিজে না পারলেও সন্তানদেরকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন। তার এই স্বপ্ন পূরণের যাত্রা ছিল অত্যন্ত সংগ্রামময়। তিনি হাল ছাড়েননি সহসাই। নারী হয়ে কৃষি কাজ দেখাশোনার পাশাপাশি হাল ধরেন কিভাবে সন্তানদের মানুষের মত মানুষ করবেন।
স্বপ্নজয়ী মা রহিমা খাতুনের বড় ছেলে মোঃ আব্দুল হামিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ (সম্মান) ও এম.এ ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি পাবনা জেলা স্কুলে সিনিয়র শিক্ষক পদে কর্মরত রয়েছেন। মেজো ছেলে মোঃ হাফিজুর রহমান ঢাকা কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ছোট ছেলে মোঃ হারুনুর রশীদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ (সম্মান), এম.এ ও এম.এস.এস ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হিসেবে
গাজীপুর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে কর্মরত। ছোট সন্তান ও একমাত্র মেয়ে ছালমা খাতুন ঢাকা ইডেন মহিলা কলেজ থেকে বি.এস.সি (সম্মান) ও এম.এস.সি; ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বি.এড এবং এম.এড ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি পাবনা প্রাইমারী টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে ইন্সট্রাক্টর পদে কর্মরত। রহিমা খাতুনের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার প্রচেষ্টাই তার প্রতিটি সন্তানকে স্ব স্ব অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ করে দিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।