জুমবাংলা ডেস্ক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রের সঙ্গে বাসভাড়া নিয়ে বাকবিতণ্ডার জেরে স্থানীয়দের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় রাবির অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থল সংলগ্ন বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, স্থানীয়রা তাদের ওপর পেট্রোল বোমা ও ককটেল নিক্ষেপ করে। এ নিয়ে ক্যাম্পাস ও পাশের বিনোদপুর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ওই এলাকায় বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে স্থানীয়দের ইটের আঘাতে ২০ শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বা প্রশাসনকে আসতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশের নিষ্কৃয়তার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস সংলগ্ন বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে বাসের ভাড়া নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয় রাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীর। এসময় বাসের লোকজনের পক্ষ হয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে ঝগড়ায় জড়ান স্থানীয় এক যুবক। খবর পেয়ে বিভাগের ৩০/৪০ জন শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি থমথমে হয়ে উঠে। পরিস্থিতি শান্ত করতে রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সেখানে উপস্থিত হন। এসময় স্থানীয়রা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়লে তারা ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। এরপর শুরু হয় দফায় দফায় সংঘর্ষ। স্থানীয়রাও দলবদ্ধ হয়ে রাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এসময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ ও রাবি শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে পেট্টোল বোমাও নিক্ষেপ করে।
খবর পেয়ে মতিহার, বঙ্গবন্ধু, শের-ই-বাংলা, লতিফ, শাহ মখদুম, আমীর আলী হলের শিক্ষার্থীরা সেখানে জড়ো হয়। তাদের ওপর ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক থেকে ক্রমাগত ইট ছুঁড়তে থাকে স্থানীয়রা। এসময় স্থানীয়দের সঙ্গে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটে।
স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে একজন হলেন ছাত্রলীগ নেতা ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সোলাইমান। আহতদের মধ্যে দুজন বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নেন। একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পুলিশকে আসতে দেখা যায়নি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাৎক্ষণিকভাবে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডিকে ঘটনাটি জানিয়েছেন। কিন্তু প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চললেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ আসেনি। রাবি প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো সাড়া মেলেনি। এ খবর লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও বিনোদপুর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
রাবি প্রক্টোর অধ্যাপক আসাবুল হক জানান, শিক্ষার্থীদের উপরে স্থানীয়রা সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় তাদের বেশকয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুত্বর আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, পরিস্থিতি আপতত (রাত ৯টায়) শান্ত। তবে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। পুলিশ ফাঁড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে।
স্থানীয়রা জানান, রাতে হঠাৎ করেই শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর বাজারে হামলা চালায়। তারা কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করে এবং আগুন দেয়। পুরো বিনোদপুর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।