আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সাইপ্রাসের লিমাসলে বসবাস করছেন বাংলাদেশের ইকবাল হোসেন। ২০১৬ সালে ছয় লাখ টাকার বেশি খরচ করে দালালের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কাতার হয়ে আসেন তুরস্ক অধ্যুষিত টার্কিশ রিপাবলিক অব সাইপ্রাসে। এরপর সেখান থেকে আরেক দালালের মাধ্যমে আরো টাকা খরচ করে পৌঁছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ সাইপ্রাস রিপাবলিকে। দালাল তাকে কথা দিয়েছিল সাইপ্রাসে আনার পর বৈধ কাগজপত্র তৈরি করে দিয়ে ইউরোপের অন্য দেশে যাওয়ার সুযোগ করে দেবে। কিন্তু সময় পার হওয়ার সাথে সাথে ইকবাল বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। বাংলাদেশী সেই দালাল তত দিনে পাড়ি জমিয়েছেন দেশে।
ইকবাল বলেন, ‘আমার মতো বহু লোককে দালালরা এমন লোভ দেখিয়েছে। দালাল আমার কাছ থেকে পাঁচ লাখ ১৫ হাজার টাকা নিয়ে নিয়েছেন। তিনি আমাকে বলেছেন, আমাকে বৈধ করে দেবেন। কিন্তু তিনি আসলে টাকা নেয়ার ফন্দি করেন। এই উপায়গুলো সবাই জানে। তিনি শুধু আমার টাকা নয় ৫০-৬০ জনের টাকা নিয়ে বাংলাদেশে চলে গেছেন। তার বিরুদ্ধে এরইমধ্যে কুমিল্লা দক্ষিণ সদর থানায় জিডি করেছি।’
সব মিলিয়ে ১২ লাখ টাকার বেশি খরচ করে আসা ইকবাল বলেন, তার স্বপ্ন ভেঙে গেছে। এখন তিনি ঋণ পরিশোধ করে দেশে ফিরতে চান। কিন্তু সমস্যা হলো আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে তিনি ভালো কোনো চাকরি পাচ্ছেন না। যেসব কাজ পাচ্ছেন সেগুলো তার পক্ষে করাও সম্ভব হচ্ছে না।
লিমাসলে বসবাস করা আরেক বাংলাদেশী শিবলি আহমেদ অবশ্য জানান, তিনি বাংলাদেশের চেয়ে ভালো আছেন সেখানে। দেশটির শহরগুলোতে বসবাসরতরা বাংলাদেশী মুদ্রায় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা রোজগার করতে পারেন। কিন্তু সেখানকার আইনের কারণে শরণার্থী বা আশ্রয়প্রাথীরা দীর্ঘ দিন কাজের সুযোগ পাননি বলে জানান তিনি। এখন কত দিন কাজের সুযোগ পাবেন তা নিয়েও আশঙ্কায় আছেন শিবলি। তিনি প্রায় সাত লাখ টাকা খরচ করে বাংলাদেশ থেকে নর্থ সাইপ্রাসে আসেন। তাকেও দালালরা ভালো চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়ে আসেন। শিবলির মতে সেই প্রতিশ্রুতির কোনোটাই তারা পূরণ করেনি।
তিনি বলেন, এখানে আসার পর আমরা খুব কষ্ট করেছি। আমি যেটা বুঝতে পেরেছি অবৈধ উপায়ে কেউ এ দেশে এলেই মহাবিপদ! এখন যেটা হচ্ছে রাতের আঁধারে উত্তর সাইপ্রাস থেকে অভিবাসীরা দালালের মাধ্যমে সীমান্ত অতিক্রম করে। যদি পুলিশ ধরতে পারে তাহলে গ্রেফতার করা হয়। এরপর দুই-তিন মাস পর তাকে দেশে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
সূত্র : ডয়েচে ভেলে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।